মারুফ সরকার ,বিনোদন প্রতিনিধি :
বাংলা চলচ্চিত্রের চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন ও মুক্তির দাবীতে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন ঢাক দিয়েছিলো ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’। আজ বিকাল চারটায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তারা তা স্থগিত করে। তবে আজ একই স্থানে পরীমনির মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করছে ‘শিল্পীর পাশে’ সংগঠনটি। এই সমাবেশে দেখা যায়নি পরীমনির কোন সহশিল্পীদের। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছেন। অথচ সমাবেশে কাউকেই চোখে পড়েনি। চলচ্চিত্র অঙ্গনের কেউ নেই। পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী কেউ ছিল না তার মুক্তি ও জামিনের সবাবেশে। পরীমনি চলচ্চিত্রে কাজ করে সেই অঙ্গনের কোন নায়ক, নায়িকা এই সমাবেশে দেখা যায়নি। এছাড়াও মানববন্ধনে দেখা যায়নি পরীমনির প্রথম ও শেষ সিনেমার পরিচালককে।

‘শিল্পীর পাশে’র পক্ষ থেকে পরিচালক মোস্তফা মনন বলেন, ‘আজকের সমাবেশে পরীমনির ন্যায্য বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে আছেন ঝুনা চৌধুরী, আজাদ আবুল কালাম, গিয়াসউদ্দিন সেলিম, নোমান রবিন, শহিদ উন নবী, কাজী রোকসানা রুমা, সেতু আরিফ, অপরাজিতা সঙ্গীতা, জয়িতা মহলানবিশসহ অনেক গুণী পরিচালক, শিল্পী, সাংবাদিক, পেশাজীবীও সাধারণ মানুষ।’ কিন্তু সমাবেশে তেমন কেউকে দেখা যায়নি।

শাহবাগ জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সমাবেশ স্থগিত করেছে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’।

এ প্রসঙ্গে সমাবেশের উদ্যোক্তা রবিন আহসান বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সম্মান জানিয়ে আজকের নাগরিক সমাবেশ আগামীকাল বিকেল ৪টায় শাহবাগে অনুষ্ঠিত হবে।’

পরীমনির সুবিচারের দাবিতে এর আগে গত ১৪ আগস্ট একই ইস্যুতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তারা মানববন্ধন করেন। এতে অংশ নেন ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, মানবাধিকারকর্মী, লেখক, প্রকাশক, সাংস্কৃতিককর্মীসহ নাগরিক সমাজের অনেকে।

মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। এরই মধ্যে পরীমনিকে নিয়ে দেশের ১৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে হয়েছে পরীমনির পক্ষে মানববন্ধন। সেখানে একাত্মতা প্রকাশ করেন লেখক, কলামিস্ট ও সাংবাদিক গাফ্ফার চৌধুরী।

উল্লেখ্য, রাজধানীর বনানী থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফায় রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে। আজ শনিবার (২১ আগস্ট) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আশেক ইমাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সকাল পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় পরীমনিকে। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা তাকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

আবেদনে তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফা রিমান্ডে পরীমনি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য দিয়েছেন। তাই এ আসামিকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন। জামিনে মুক্তি পেলে পালাতে পারেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম। গত ১০ আগস্ট পরীমনি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। ৫ আগস্ট পরীমনি ও দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ।

এর আগে মাদক মামলায় গত ১৩ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *