রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ- মুই ১৯৮৮ সালের বন্যা দেখিছু,তখন ঝড় বৃষ্টি এক সাথে হয়ছে কিন্তু এবার ঝড় নাই খালি বৃষ্টি হয়ছে। এ বৃষ্টিত মোর বাড়ী ঘর ডুবে গেছে,মোর ধানলা শেষ হয়ে গেজে,গরু ছাগললা কোনতি যে গিজে মুই কওবা না পারু মোর সব শেষ হয়ে গেজে মুই আলা কি নেহেনে বাচিম এ আকুতির কথাগুলো বলছিলেন ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলা জুড়ে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত লেহেম্বা গ্রামের দক্ষিন পাড়ার সালামের স্ত্রী ছালমা বেগম। তিনি আরো বলেন,বৃষ্টির পানিলা আসতে ঘরলাত ডুকপা শুরু করিল,তারপর গোটা ঘরটা পানিতে ভরে গেল গে বলেই কান্না শুরু করেন। এছাড়াও লেহেম্বা দক্ষিন পাড়ার রুবেল,হাড়িয়া গ্রামের সৈকত,ভবানীপাড়ার ছাত্তারসহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্তরা কেদে কেদে তাদের ক্ষতির কথাগুলো জানাচ্ছিলেন আমাদের প্রতিবেদকের কাছে। এরকম আহাজারি বর্তমানে রানীশংকৈল উপজেলা জুড়ে চলছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যে। একইভাবে পৌরশহরের পাইলট স্কুল পাড়া, ভাটাপুরা,হাড়িয়া,চড়োল পাড়া,কাশিপুর ইউপির বিভিন্ন গ্রামসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়ী ঘর বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও সদ্য লাগানো ধান সর্বনিন্ম ১০ ফিট পানির নিচে অবস্থান করছে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকরা বলেন,যে ধানগুলো সম্প্রতিকালে লাগানো হয়েছে সে ধানগুলো পানির নিচে থাকায় ক্ষতি হওয়ার আশাংকা রয়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে বাড়ী ঘর ডুবে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্তরা ১২ আগষ্ট শনিবার উপজেলার ডিগ্রী কলেজ,পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,আবাদতাকিয়া মাদ্রাসা,চোড়ল পাড়া স্কুল,জওগাও উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। সেদিন থেকেই দুই এমপি ঠাকুরগাও-৩ আসন ইয়াসিন আলী,সংরক্ষিত এমপি সেলিনা জাহান লিটা,উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক,ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান,মেয়র আলমগীর সরকার,আ’লীগ স্বেচ্ছাসেবকলীগ,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা বেগম পুতুলসহ উপজেলার বিত্তবানরা ব্যক্তিগতভাবে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের শুকনো খাবার,খিচুরিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করছেন। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পাইলট স্কুল যাওয়ার নিচ থেকে কমপক্ষে ১৫ফিট উচ্চতার রাস্তার উপর দিয়ে পানি বইছে। মানুষের ঘর ডুবে টিনের চালাও প্রর্যন্ত দেখা যায় না। অনেক মানুষের মাটির ঘরগুলো ভেঙ্গে পানির সৌতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের রাস্তা ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে এছাড়াও নানান অ-সুবিধা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেন,যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে তাতে আগামী কয়েক বছরের এ ক্ষতি পুরন হবার সম্ভবনা নেই। এদিকে এত ক্ষতি হওয়ার মধ্যেও এনজিও কর্মীরা সাপ্তাহিক কিস্তি উঠানোর জন্য গ্রামে গ্রামে গিয়ে ঋণ গ্রহিতাদের কিস্তির টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এ রিপোট লেখা প্রর্যন্ত আকাশের আবহওয়া খারাপ ছিলো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন,প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এছাড়াও আমি উপজেলার বিত্তবানদেরও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *