mail.google

হারুন উর রশিদ সোহেল রংপুর ॥
গ্রামগঞ্জের মেঠোপথ থেকে হাট-বাজার হয়ে রংপুর শহরের অলিগলি ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঐতিহ্যবাহী ও সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আমে ভরে উঠেছে। বাম্পার ফলন ও বাজারদর ভালো হওয়ায় আম চাষেই স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন আম চাষিরা। অন্যদিকে স্বল্প দামে মনকাড়া আম হাতের নাগালে পেয়ে ভীষণ খুশি ক্রেতারা ।
এদিকে রংপুর জেলায় এবার ১৬২ কোটি টাকার আম বিক্রির আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে আম সংরক্ষণসহ নানা জটিলতায় দর পতনের আশংকা করছেন আম চাষিরা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় দুই হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ১৫ হাজার ৯৫০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আমের কারণে অনেকেই রাজশাহীর পর এখন রংপুরকে আমের এলাকা বলে থাকেন।
রংপুর মহানগরীর প্রবেশ দ্বার পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার সড়ক, মহাসড়ক ও গ্রামের মেঠোপথে সারি সারি হাঁড়িভাঙ্গা আমের গাছ। মিঠাপুকুর উপজেলাতেই ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩ হাজার ৮টি হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাগান রয়েছে।
রংপুরের ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িভাঙ্গা আম এখন দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পুরণ করে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে এ জাতের আম চাষ করে অনেকেই ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা। অন্য ফসলে খুব একটা লাভ না হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে আমের চাষ। চাষিরা আগ্রহ নিয়ে আম চাষে এগিয়ে আসছেন। অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় শিক্ষিত বেকার যুবকরাও ঝুঁকে পড়েছেন আম চাষে।
হাঁড়িভাঙ্গা ছাড়াও এ অঞ্চলে মিছরিভোগ, ফজলি, গোপালভোগ, কপিল বাঙ্গরিসহ নানা জাতের আম চাষ হয়। আম বাগানগুলোতে সারাবছর শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন হাজার হাজার শ্রমিক। চাহিদা থাকায় বাগান মালিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। বাগান মালিকরা বলছেন, রংপুরে এবার যে আমের ফলন হয়েছে, তা সারাদেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব।
হাড়িভাঙ্গা আমের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত মিঠাপুকুর উপজেলার সর্দারপাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম সরকার বলেন, চলতি বছর ১২ একর জমিতে আম চাষ হয়েছে। ২০ লাখ টাকার আম বিক্রি করা যাবে।
চৌধুরী গোপালপুর জলাইডাংগা গ্রামের আমচাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চলতি বছর ২ একর জমিতে আম চাষ করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে।
বদরগঞ্জ উপজেলার জয়নাল আবেদীন বলেন, হাঁড়িভাঙ্গা আম আমার ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করেছে। মৌসুমের শুরুতে এ আম প্রতি কেজি ৫০ টাকা ও শেষের দিকে ১শ ৫০ টাকা থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।এদিকে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, রংপুরের ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িভাঙ্গা আম আরো সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী দিনে রংপুরের আম সারাদেশের চাহিদা মিটিয়ে আরো বেশি করে বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে।বেশি লাভের আশায় আম চাষ করছেন চাষিরা। এ বছর আমের ব্যাপক ফলন ও বাজারদর ভালো হওয়ায় চাষিদের মাঝে আম চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি। ##

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *