robidas_pic-_21

ইশরাত জাহান চৌধুরী, মৌলভীবাজার ::
“বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ”- এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচী পালণ এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে রবিদাস জাতি পোষ্ঠির লোকজন। গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় মৌলভীবাজার শহরের চৌমোহনায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন ”বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ”- মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি রানু রবিদাস। বক্তব্য রাখেন ”বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ”- এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহন রবিদাস। আরো বক্তব্য রাখেন বাচ্চু রবিদাস, শান্তিলাল রবিদাস, গোলাপ রবিদাস, মিঠাইলাল রবিদাস, সুনীল রবিদাস, দশরথ, সাধন রবিদাস, মানিক রবিদাস, ময়না রবিদাস, রিপন রবিদাসসহ ”বাংলাদেশ রবিদাস উন্নয়ন পরিষদ”- মৌলভীবাজার জেলা শাখার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তাগন বলেন- সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রশ্নে বারবার উপেক্ষা করা হচ্ছে রবিদাসদের। ইদানিং রবিদাস জাতি আদিবাসী কিনা এ ব্যাপার নিয়ে ব্যপকভাবে আলোচনার ঝড় চলছে। এদেশের প্রাচীন জাতিসত্ত্বা সাঁওতালদের বিখ্যাত শ্লোক “হিহিড়ি-পিহিড়ি” এর ব্যাখ্যায় আছে যে, সাঁওতালরা তাদের নিজের মাতৃভূমিকে আর্যদের হাত থেকে রক্ষার সময় জঙ্গলে এই রবিদাস বা চর্মকার জাতির নিকট আশ্রয়লাভ করে এবং তারাই রবিদাস জাতিকে প্রথম বন্য বলে মনে করত। এছাড়াও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ওখঙ) স্বীকৃত আদিবাসীর সকল সংজ্ঞানুসারে আদিবাসী হিসাবে বিবেচনার যে সকল বৈশিষ্ঠ্য আবশ্যিক, তার প্রত্যেকটিই রবিদাস জাতির মধ্যে বিদ্যমান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যাতীত), আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস কর্তৃক সুপারিশকৃত, সারা দেশের জেলা প্রশাসকদের প্রেরিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তালিকা, এশিয়াটিক সোসাইটির গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য, শিল্পকলা একাডেমীর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সেল কর্তৃক প্রকাশিত গবেষণাপত্র, জেলা প্রশাসক কর্তৃক সরবরাহকৃত আদিবাসী সনদ, বিভিন্ন ধরনের জাতীয় প্রকাশনাসমূহ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদসহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠন কর্তৃক প্রদানকৃত আদিবাসী সনদ ইত্যাদিতে রবিদাসদের আদিবাসী হিসেবে গন্য করা হয়েছে। আদিবাসী হতে এমন কোন বৈশিষ্ঠ্য অনুপস্থিত নেই যা রবিদাস জাতির মাঝে কমতি আছে। তবে কোন কারনে রবিদাস জাতিকে আদিবাসী হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভূক্ত করা হবে না ? ২০১০ সালে চুড়ান্ত হওয়া “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০” এর তালিকায় আমাদেরকে রাখা হয়নি। পরবর্তীতে বাদপড়া আদিবাসীদের গেজেটভূক্তির নায্য দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। আমরা এ প্রশংসনীয় উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পাশাপাশি রবিদাসদের এই সংশোধিত তালিকায় অন্তর্ভূক্তির জোর দাবী জানাচ্ছি প্রতিনিয়ত। সর্বশেষ, আমরা খসড়া তালিকা থেকেও বাদ পড়েছি। চলমান সংশোধিত “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন-২০১০” এর তালিকায় রবিদাস জাতিকে অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে সকলের সার্বিক সহযোগীতা একান্তভাবে কাম্য। মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *