রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ছাত্রলীগ ও আ’লীগের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মিছিল মিটিং অব্যহত রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। তটস্থ রয়েছেন রাজিবপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা। কোন্ দিক থেকে কোন্ পক্ষের উপর হামলা হবে তা অনিশ্চিত। ইতোমধ্যেই ছাত্রলীগ সমর্থীত ব্যক্তির একটি হার্ডওয়ারের দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। লাঞ্ছিত করা হয়েছে আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরোকে। মারধর করা হয়েছে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকে। এছাড়াও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিস্কার করেছে স্থানীয় আ’লীগ। সময় যতই গড়াচ্ছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি যেন ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্রই।

রাজিবপুর ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বাবু জানান, রাতদিন পরিশ্রম করে নৌকা প্রতীককে জেতানো চেষ্টা করেছি। তিনি সফল হতে পারেন নি। এ দায়ভার তো আমাদের নয়। কিন্তু প্রার্থী গোলাম কিবরিয়ার চাচা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম একপেষেভাবে ছাত্রলীগকেই এর জন্য দায়ি করছেন। প্রথমে ছাত্রলীগের ভেতরে দু’গ্রুপ তৈরি করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। তা না পেরে পুরো উপজেলা আ’লীগকে আমাদের প্রতিপক্ষ তৈরি করতে চাইছেন। এখানে কোনো গণতন্ত্র নেই চলছে আলম তন্ত্র। যখন খুঁশি যাকে বহিস্কার করা হচ্ছে। আমরা আলম তন্ত্রের অবশান চাই। গায়ে একবিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আলম তন্ত্রের বাস্তবায়ন হতে দেব না।

তবে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সাথে আ’লীগ প্রতিপক্ষ হবে কেন? এখানে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনেছে ছাত্রলীগেরই অধিকাংশ নেতা। নীতিগত কারণে তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। আমি বা আ’লীগের যারা আছেন তারা সবাই চেষ্টা করছি তাদের বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ’লীগের একাধিক নেতা জানান, এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল আলমকে দোষারোপ করা যায় না। যা করছেন সবই তার ভাতিজা গোলাম কিবরিয়া। তিনি ভোটে হেরে এখন পাগল প্রায়। বলতে গেলে শফিউল আলমও তার নিকট অসহায়।

এদিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন হিরোকে লাঞ্ছিত করার কথা স্বীকার করে রাজিবপুর আ’লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সরকার বলেন, ছাত্রলীগের কাউকে বহিস্কার করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছাত্রলীগের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছিলেন মাত্র। কিন্তু তারা সেটা মানেনি। আমরা বিষয়টি জেলায় অবহিত করেছি তারা ব্যবস্থা নেবেন। আর সাবেক সাধারণ সম্পাদককে লাঞ্ছিত করেছে গোলাম কিবরিয়া। এ বিষয়ে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এদিকে রাজিবপুর সদর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।

রাজিবপুরে আ’লীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে বিরোধ চলছে এ বিষয়ে আপনারা কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াহিদুন নবী সাগর বলেন, দলে নিজেদের মধ্যে টুকিটাকি বিরোধ তো সারাদেশেই চলছে। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে রাজিবপুর ছাত্রলীগ যদি আমাদের কোন সহযোগিতা চায় আমরা সেটা দেব। #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *