ষ্টাফ রির্পোটার ॥ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ পিআইওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছন সচেতন মহল।এতদ সংক্রান্ত একাধিক খবর সাপ্তাহিক নতুন বাংলার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর জেলার অনেক সচেতন মহল এ অভিমত ব্যক্ত করেন। তবে জেলার আদিতমারীর পিআইও কুখ্যাত দুর্নীতিবাজ মফিজুল ও কালিগঞ্জের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ পিআইও রাশেদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর লম্বা হয়ে উঠেছে। প্রসঙ্গতঃ লালমনিরহাটের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের বেশির ভাগ অর্থই লোপাটের অভিযোগ উঠেছে পিআইওদের বিরুদ্ধে।হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্ধকৃত টাকা তারা ভুয়া ভাউচার বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিজেদের পকেটস্থ করছে। জানা গেছে, অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার সারা দেশে কর্মসৃজন প্রকল্পে ৪০ দিনের কর্মসুচি চালু করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পিআইওসহ সংশ্লিষ্টরা হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। যার ধারাবাহিকতায় লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় দুই পর্যায়ে মোট ৮০টি কর্মদিবসে ছিন্নমুল শ্রমিকরা রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাঠে মাটি ভরাটের কাজ করেন। দৈনিক দুইশত টাকা মজুরীতে সাধারন শ্রমিকরা ও ২৫০ টাকা মজুরীতে সর্দাররা কাজের সুযোগ পান। জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় দুই পর্যায়ে ৫৫৮টি প্রকল্পের বিপরীতে ১৪ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। যার মধ্যে ৮ হাজার ৭৪৭ জন সাধারণ শ্রমিকের মজুরী ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ও ৫৫৮জন শ্রমিক সর্দারেরর মজুরী ধরা হয়েছে ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। এসব প্রকল্পে একটি করে সাইনবোর্ড সাটানোর জন্য পৃথক ৭৭ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৫টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য একটি সাইনবোর্ড সাটানো বাধ্যতা মুলক। এসব সাইনবোর্ড তৈরীর ভাউচারে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় বিস্তর ব্যবধান লক্ষ করা গেছে। কাঠের ফ্রেমে প্রতিটি ডিজিটাল সাইনবোর্ড তৈরীতে পাটগ্রাম উপজেলায় খরচ দেখানো হয়েছে সাত শত টাকা। অথচ ওই একই সাইনবোর্ড তৈরীতে সদর ও আদিতমারীতে ২হাজার ৯৫০ টাকা এবং কালীগঞ্জ উপজেলায় ২হাজার ৮৫০ টাকার খরচ দেখানো হয়েছে। জেলার ভিতরে সাইনবোর্ড তৈরীর খরচের এমন ব্যবধান লুটপাটকে প্রমান করে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করতে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইনবোর্ডের ৮হাজার এক শত টাকা জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কার্যালয়ে ফেরৎ পাঠালেও অন্যদের এমন তথ্য নেই। অর্থ বছর শেষ হওয়ায় প্রকল্পের চুড়ান্ত প্রতিবেদন জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কার্যালয়সহ ঊর্দ্ধতন দফতরে পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা কমিটি। শুধু তাই নয়, প্রতিটি প্রকল্পের চেয়ারম্যানদের আনুষঙ্গিক খরচের জন্য বরাদ্দ থাকলেও কেউ কেউ আংশিক পেয়েছেন। আবার অনেকে কোন টাকাই পান নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কাগজ কলমে ঠিক রেখে লোপাট করেছেন এসব অর্থ। ইউনিয়ন কমিটির খরচ দেখানো হলেও বাস্তবে ইউনিয়ন কমিটি কোন খরচ পান না বলে দাবি করেছেন একাধিক জনপ্রতিনিধি। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য ও জনপ্রতিনিধি জানান, জেলার ৫টি উপজেলার শুধুমাত্র সাইনবোর্ড ও তার ভাউচার মিলালে বেড়িয়ে আসবে এসব প্রকল্পের লুটপাটের আসল তথ্য। এজন্য তারা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও)ও শীর্ষ দুর্নীতিবাজ রাশেদুল ইসলাম জানান, তার উপজেলার ১১৪ টি প্রকল্পে ১১৪টি সাইনবোর্ড তৈরী করা হয়। যার প্রতিটির মুল্য ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮৫০টাকা। প্রকল্পে বরাদ্ধ ছিল তাই খরচ দেখানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই উপজেলার একাধিক ইউনিয়নের সদস্যরা জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) রাশেদুল ইসলাম একজন ঘুষখোর হওয়ায় জেলায় কর্মসৃজন প্রকল্পে সব থেকে বেশী টাকা লোপাট হয়েছে এই উপজেলা । উক্ত শীর্ষ দুর্নীতিবাজ পিআইও রাশেদুল দীর্ঘদিন ধরে একই উপজেলায় কর্মরত থাকার সুযোগে প্রতি বছর কোটি কোটি সরকারি টাকা এভাবে লুটপাট করে ইতো মধ্যে কুড়িগ্রামে কোটি টাকার সম্পদ ক্রয়সহ কয়েক কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে আলিসান বাড়ি তৈরী করছেন বলে একটি বিশ^স্থ সুত্রে জানা গেছে।উক্ত পিআইও রাশেদুলের আয়ের সাথে ব্যয়ের তুলনা করলে বছরে তার একটি টাকাও জমা থাকার কথা নয়। কারন হিসেবে জানা গেছে,পিআইও রাশেদুল প্রতিদিন ২ পেকেট বেনসন সিগারেট পান করেন। প্রতি পেকেট সিগারেটের মুল্য ৩১০টাকা হিসেবে পেকেটের মুল্য দ্বারায় ৬২০টাকা।প্রতিমাসে ১৮ হাজার ৬০০টাকা লাগে তার ধুমপান করতে। এরপর তার পরিবারের খরচ হিসেব করলে প্রতিমাসে তার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর কথা। তার বেতনের সাথে ব্যয়ের তুলনা করলে প্রতি বছর তার একাউন্টে একটি টাকাও জমা থাকার কথা নয়। অথচ তিনি প্রতি বছর তার গ্রামের বাড়িতে জমি ক্রয়সহ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে আলিসান বাড়ি নির্মান করছেন বলে জানা গেছে। তার এই কোটি কোটি টাকার উৎস কোথায় সচেতন মহলের দাবী। সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, ইউনিয়ন কমিটিকে খরচ দিলেও তারা শ্রমিকদের হাজিরা বহিসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি প্রস্তুত রাখেন না। তাই এ বছর ইউনিয়ন কমিটিকে কোন খরচ করতে দেয়া হয় নি। জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার সুজাউদদৌলা সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।অনেকে বলছেন,আদিতমারীর কুখ্যাত দুর্ণীীতবাজ পিআইও মফিজুল ও কালীগঞ্জের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ পিআইও রাশেদুলের খুঠির জোড় কোথায়? তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ অন-লাইনগুলোতে ধারাবাহিক খবর প্রকাশ হওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় দুর্ণীতিতে তারা আরও উৎসাহ পাচ্ছে বলে সচেতন মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *