ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ৩ লাখ লোকের চিকিৎসাসেবা চলছে মাত্র তিনজন চিকিৎসক দিয়ে। আর চিকিৎসক সংকটের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
স্বাস্থকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা এবং একজন মেডিকেল অফিসার কর্তব্যরত রয়েছেন। রোগীর চাপ সামলাতে শিলখুড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ডেপুটিশনে একজন মেডিকেল অফিসার আনা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। একজন মেডিকেল অফিসার আবাসিক মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন এবং অন্যজন জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকেন। ফলে আউটডোরে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। রোগীর চাপ সামলাতে অন্য দুই চিকিৎসকসহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক কাজের ফাঁকে রোগী দেখতে হয়।
রবিবার (২৪ মার্চ) সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দুইজন মেডিকেল অফিসার মিটিংয়ে থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা নিজ চেম্বারে বসে আউটডোরের রোগী দেখছেন। কথা হয় চিকিৎসার জন্য আসা শিলখুড়ি থেকে আনোয়ার (৫০), ইসলামপুর থেকে ফরিদা (৪৫), ইশ্বরবরুয়া থেকে আনোয়ারার (৫০) সঙ্গে। দুই ঘন্টা থেকে অপেক্ষা করেও এরা চিকিৎসকের সিরিয়াল পাননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আবু সাজ্জাদ মো. সায়েম জানান, উপজেলার পাঁচটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও চারটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৮ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও গোটা উপজেলা মিলে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র তিন জন।
তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে রয়েছে মাত্র ১ জন, এছাড়া মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, শিশু ও দন্ত চিকিৎসায় কনসালটেন্ট পদে দীর্ঘদিন থেকে কোনও চিকিৎসক নেই। এছাড়া ৯টি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেও দীর্ঘদিন থেকে কোনও চিকিৎসক নেই।
তিনি আরও জানান, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৫০ শয্যা চালু করা হলেও ৫০ শয্যার জনবল এখনও পাওয়া যায়নি। ফলে ৩০ শয্যার জনবল দিয়েই ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসক না থাকায় সপ্তাহে এক দিন করে ওই সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
ডা. আবু সাজ্জাদ মো. সায়েম বলেন, সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নতুন চিকিৎসক নিয়োগ হলে সমস্যা কেটে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *