বিশেষ প্রতিবেদক
কুড়িগ্রামের কচাকাটায় অজ্ঞাত রোগে অর্ধশতাধিক গরুর মৃত্যু হয়েছে। ১মাসের ব্যবধানে গরুগুলোর মৃত্যু ঘটে। একের পর এক আক্রান্ত হওয়ায় গরু নিয়ে অন্য গ্রামে পাড়ি দিচ্ছে গ্রামবাসীরা। এদিকে সব চিকিৎসা ব্যর্থ হওয়ায় গরুর গলায় তাবিজ কবজ ঝুলিয়ে রোগ মুক্তির চেষ্টা করছে তারা। অজ্ঞাত এ রোগ দেখা দিয়েছে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নের মহসিনের চর, কামারের চর, রঘুরভিটা এবং দেওয়ানগাজি গ্রামে।
খোজ নিয়ে জানাযায়, বল্লভের খাষ ইউনিয়নের রঘুর ভিটা গ্রামের মন্টু মিয়ার ২টা, অলিল, কসমত, সুলতান, নূরমোহাম্মদ, নূরহোসেন,নালুয়া,হামিদের ১টি কর গরু মারা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, একসপ্তাহে রঘুরভিটায় মোট ১৩টি গরু মারা যায়। এছাড়া একই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ৬টি গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে এলাকাবাসী জানায়, গরু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন প্রকার লক্ষণ বোঝা যায় না। ধারনা করা হচ্ছে ওই গ্রামের সবগরুই আক্রান্ত হয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সুস্থ গরু হঠাৎ কাপুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যায়।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ১মাস আগে একই ইউনিয়নের মহসিনের চরে এ রোগের প্রভাব দেখা যায়। সেখান প্রায় অর্ধশত গরু মারা যায়। পরে কামারের চরে এ রোগের আগমন ঘটে। গেল সপ্তাহ থেকে রঘুর ভিটা গ্রামে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। গ্রামবাসীরা জানায়, স্থানীয় পশু চিকৎসক দ্বারা চিকিৎসা করেও রোধ হচ্ছ না এ রোগ। আস্তে আস্তে এ রোগ আশে পাশের গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। পাশের গ্রাম দেওয়ানজাগী গ্রামে ১টা এবং কেদার ইউনিয়নের ছালামের চরে একই রোগে গেল দুই দিনে ২টি গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মারা যাওয়া গরুর মালিক মন্টু মিয়ার,অলিল, কসমত, সুলতান, নূরমোহাম্মদ ও নূরহোসেন জানায়, গরু লালন পালন করে তাদের সংসার চলে।হঠাৎ গরুগুলো মারা যাওয়ায় হতবিহল হয়ে পড়েছেন তারা। ডাক্তারী চিকিৎসা দেয়ার পরেও মারা যাওয়ায় এখন অন্য গরুগুলোর গলায় তাবিজ কবজ ঝুলিয় রোগাক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। তারা বলেন এসব তাবিজে কাজ হবে কিনা তাদের জানা নেই। অনেকে আবার রোগের হাত থেকে গরুকে বাচাতে অন্য গ্রামে সরিয়ে নিচ্ছেন।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক ছানোয়ার হোসেন জানান, গত কয়েক সপ্তাহে মহসিনের চরে ৪৩টি এবং রঘুর ভিটায় ১৩টি গরু মারা যায়।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, আমাদের টিম তিনদিন থেকে ওই এলাকায় কাজ করছে। সাসপেক্ট অনুয়ায়ী ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। সচেতনাতামূলক আলোচনা চলছে এবং রোগ সনাক্তের জন্য মৃত গরুর রক্ত সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠান হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান গতকাল বৃহস্পতিবার রঘুর ভিটা গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলেন। তিনি সংবাদকর্মীদর জানান, উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। ধারনা করা হচ্ছে বিষাক্ত ঘাস খাওয়ানোর ফলে গরুগুলো মারা গেছে তবে ল্যাবের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক
কিছু বলা যাচ্ছে না।তবে এলাকার লোকজনকে আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।