কবিতা-
প্রকৃতির প্রতিশোধ
কবি-নাজমুল হুদা পারভেজ
লেখার তারিখঃ-১১/০২/২০২২ইং
সময়ঃ রাত ৪টা।
বিয়ের পূর্বেই মোবাইলে আলাপচারিতা –
কিছুই থাকেনা বাকি যখন
শুধু কলেমা টুকু তো?
অভিভাবক- সামাজিকতার নেই প্রয়োজন।
মা-বাবা’র স্বপ্ন সাধ-
উবে যায়- উবে যাক,
জীবনটা যখন কেবলি তাদের
দোয়া দরকার নেই অভিভাবকের।
সারাটা জীবন- রবে একসাথে
ওদের চাওয়া-পাওয়াটাই মুখ্য,
বুকের ভিতরে কষ্ট চেপে-
অভিভাবকের নেই কোন দুঃখ।
দাও ছেলের পছন্দটাকেই গুরুত্ব
নচেৎ সময়েরটানে বাড়বে দূরত্ব।
বৌ- ঘরে তুলতে হবে-
বুকে কষ্ট চাপা দিয়ে।
মা এখন হয়েছে বৃদ্ধা-
যৌবনকালে স্বামী গেছে তিরোধানে
একমাত্র পুত্রকে বুকে জড়িয়ে,
বিয়ে করেনি যৌবনের টানে।
ছেলে ধরেছে সংসাবেব হাল
বয়সের ভারে মা বেসামাল,
পুত্রবধূ অবসর দিয়েছে তাকে
বলেছে, এখন তাদের কাল
চিকিৎসা নেই, ঔষধ নেই
অযত্নের কথা বলেনা বাছারে,
ছেলে থাকে দোতলার উপরে
মা থাকে গোয়াল ঘরে।
সকাল,বিকাল,সন্ধ্যা রাত
কেটে যায় তার অন্ধকারে,
নাতি-নাতনি ব্যস্ত সবাই-
কেউ দেখতে আসেনা তারে।
মা থাকে গরুর সাথে
গরু দেখার মানুষ আছে,
প্রস্রাব- পায়খানায় গড়াগড়ি যায়
কেউ তাকে দেখার নাই।
কাজের মেয়ে রেখেছে ওরা
ভাত দেয় দু বেলা
ছেলে বুঝেনা-পশুরা বুঝে
ওরা কাঁদে, দেখে অবহেলা।
একদিন শীতের সকাল বেলা
মা গোয়ালে মরে আছে,
সংবাদ শুনে সকলে যেন
হাফ ছেড়ে প্রাণে বাঁচে।
কিছুদিন পরে, কুলাঙ্গারের ঘরে
অর্থ, সুখ ,উচ্ছলে পরে,
নাতি-নাতনি হয়েছে ডাক্তার
বিদেশে থাকে সকলকে ছেড়ে।
প্রকৃতির নিষ্ঠুর প্রতিশোধ আসে
সন্তানরা, মরে প্লেন ক্রাশে,
ক্যান্সারে আক্রান্ত কুলাঙ্গার ছেলে
পুত্রবধূকে ধরলো অজ্ঞাত পিশাচে।
দু’জনার চিকিৎসার অর্থ জোগাতে
জমা-জমি, বেচে ফকিরবেশে।
প্রকৃতি কখনো ক্ষমা করেনা-
বুঝল মৃত্যুর কালে অবশেষে।
=========