রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে ব্যক্তি মালিকানা ফসলি জমিতে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসি। জমির মালিক প্রায় অর্ধশত পরিবার ও এলাকাবাসি গতকাল রবিবার উপজেলার মরিচাকান্দি এলাকায় তাদের ফসলি জমিতে দাড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে অন্যস্থানে অনাবাদি জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচীতে তিন ফসলি জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের তীব্র বিরোধীতা করে বক্তব্য রাখেন, কৃষক রবিউল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, লাল মিয়া, দুদু মিয়া, লুৎফর রহমানসহ অনেকে। এসময় কৃষক লাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের নামে রেকর্টভুক্ত এই জমি দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আমরা আবাদ করে আসছি। এই জমিতে তিন ফসল আবাদ করে আমাদের পরিবারের খরচ চলে। বালবাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ যোগাই। এখন যদি ভোগদখলীয় জমি কেড়ে নেয়া হয় তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। উপজেলায় অনাবাদি অনেক খাস জমি রয়েছে সরকার সেখানে গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে না দিয়ে আমার ফসলি জমিতে হানা দিয়েছে।’

উল্লেখ্য যে, ব্যক্তিমালিকানা দাবি করা চরসাজাই মৌজায় ৩ একর ৬১ শতাংশ জমি সরকারি খাস খতিয়ানে থাকার কারনে এক সাপ্তাহ আগে ওই জমি চিহ্নিত করে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে যায় উপজেলা প্রশাসন। সেখানে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের সাইনবোর্ডও লাগানো হয়।

রবিউল ইসলাম নামের এক কৃষক তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ইউএনও স্যার হঠাৎ করে আমাদের নামে রেকর্টভুক্ত ফসলি জমি খাস খতিয়ানের বলে দাবি করে। গৃহহীনদের ঘর নির্মান করে দেয়ার উদ্যোগ নেন। জমিতে ধান, ভুট্টা ও সবজি রয়েছে। সেই ফসলেরও ওপরে মাটি ফেলার চেষ্টা করছে। জবর দখল করে এই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হলে ৪৮টি পরিবারে স্ত্রী সন্তান সবাইকে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তাছাড়া একই দাগের জমিতে ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি রয়েছে। আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গৃহহীন করে দিয়ে অন্য গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেয়ার চেষ্টা করছেন ইউএনও স্যার। আমাদের জীবন থাকতে এটা হতে দিব না।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দাগের ৩ একর ৬১ শতাংশ জমি খাস খতিয়ানের। যেহেতু সরকারের নামে রেকর্টভুক্ত সে কারনে ওই জমিতে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের প্রকল্প যা মজিবশত বর্ষ উপলক্ষে দ্রুত আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *