কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ^রী সোনাহাট রেল সেতু পয়েন্টে দুধকুমার নদী বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও জেলার ধরলা,ব্রহ্মপুত্র,তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে।
দেশের বৃহৎ নদ নদীময় জেলায় ১৬টি নদনদীর প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক চরাঞ্চলে ৭/৮লাখ মানুষের বসবাস। পাহাড়ী ঢল আর টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদী গুলোতে পানি বাড়ায় নদী অববাহিকার চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ায় গ্রামীণ সড়ক এবং নিম্নাঞ্চলের বাড়ি গুলো পানিবন্দি হওয়ায় প্রায় ১০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষ নৌকা-ভেলা করে চলাচল করছে। এছাড়াও পানিতে তলিয়ে গেছে সবজি, আমনের চারাসহ পাট।
বুধবার সকালে নাগেশ্বরী উপজেলা বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের তেলিয়ানী পাড়ায় দুধকুমার নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে তীব্র স্রোতে পানি লোকালয়ে ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল।
বামনডাঙ্গা ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবেদ আলী জানান, মঙ্গলবার বিকেল থেকে তেলিয়ানীতে তার বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর দিয়ে দুধকুমারের পানি লোকালয়ে ঢুকতে থাকে। ক্রমে মাটি ক্ষয়ে স্রোতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। বড় বড় গর্ত হয়ে তলিয়ে যেতে থাকে বাঁধে থাকা জিও ব্যাগ। একসময় স্রোতের তীব্রতায় ভেঙ্গে যায় প্রায় ২৫০ মিটার বাঁধ।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের উত্তর নওয়াবশ গ্রামের বাসিন্দা মর্জিনা বেগম,প্রায় তিন হলো বাড়িতে পানি উঠেছে। মঙ্গলবার বাধ্য হয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি।
একই এলাকার সবজি চাষী বিপ্লব বলেন, প্রায় এক বিঘা জমিতে পটল আবাদ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে কিন্তু দু/তিন দিনের মধ্যে পানি এসে সবজি খেত তলিয়ে গেছে। পটলও নষ্ট হয়ে গেছে। যে কয়েকটা ভালো আছে রান্নার জন্য বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, বুধবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৯৯ মিলিমিটার এবং পরবর্তি ৬ঘন্টায় আরোও ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টা আরো ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,২২ ও ২৩ জুন প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী বন্যা হওয়ার আশংকা নেই বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান,বন্যা মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। যেখানে প্রয়োজন হবে তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে