মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স( পাকেরহাট)-এ দীর্ঘ ৬ মাস পর অপারেশন চালু হচ্ছে। পাকেরহাট হাসপাতালটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রচেষ্টায় ও খানসামা বাসীর কথা চিন্তা করে ৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উপনীত করেন।এর পর হাসপাতালে অপারেশন চালু হয়। কিন্তু অপারেশনকে কেন্দ্র করে অল্প দিনের মধ্যে তৎকালীন উপঃ স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ও আরএমও রোগীদের কাছ থেকে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে অর্থ আদায় এবং অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়াও সে সময় প্রায় ৮ মাস ধরে হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স বন্ধ ছিল। গত কয়েক মাস আগে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ সহিদুজ্জামান শাহ আওয়ামী লীগে যোগদানের পর হতেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে কয়েক দফায় হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সহ নিজ উদ্দ্যোগে এ্যাম্বুলেন্স মেরামত করে তা চালু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ৫ই জুলাই বুধবার হঠাৎ করে আবারো হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও রোগীদের খোঁজখবর নেন।
এরপর উপঃ স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার রুমে মেডিকেল অফিসারদের সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের নিয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাধারন পরিবারের রোগী ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সিজার সহ অন্যান্য অপারেশন চালু হবে।
অপারেশন চালুর কথা শুনে সাধারন রোগী ও তাদের পরিবারের লোকজনের মুখে হাসিখুশি ভাব দেখা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিঃবিভাগে রফিকুল নামের এক সাধারন রোগীর সাথে অপারেশন চালুর বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান, আমার স্ত্রীর ২৮ দিন আগে দিনাজপুর হাসপাতালে সিজার করে বাচ্চা হয়। হাসপাতালে কোন টাকা না নিলেও যাতায়াত ও ঔষধ সহ মোট ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর পাকেরহাটে যদি সিজার হয় তাহলে যাতায়াতের কোন খরচ লাগবে না। এতে টাকাও বাঁচবে সময় বাঁচবে।
অন্যদিকে রুবিনা নামের এক মায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার বাচ্চা হয়েছে প্রায় ২ মাস আগে। ডাক্তার আমাকে সাধারনভাবে বাচ্চা হবে বলে জানিয়েছিলেন। আমার বাচ্চা হওয়ার তারিখ শেষ হয়ে গেলেও বাচ্চা হওয়ার কোন লক্ষ্য দেখা যাচ্ছিল না। এরপর আমি পাকেরহাট হাসপাতালে বিকেলে ভর্তি হই। ভর্তির হওয়ার পরদিন আমার পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। এরপর আমাকে দিনাজপুরে রেফার্ড করা হলে আমার অবস্থার অবনতি ঘটায় এক ক্লিনিকে দ্রুত সিজার করি। এতে আমাদের গরীব সংসারের প্রায় ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। এই সিজারটি যদি পাকেরহাট হাসপাতালে হত তাহলে এত টাকা খরচ লাগতো না। অপারেশন চালুর কথা শুনে মহিলাটি অনেক খুশি হয় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের আল্লাহ ভালো করুক বলে দোয়া করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মোঃ সামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ সহিদুজ্জামান শাহ ও উপঃ স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নজমুল ইসলাম এর নিজ উদ্দ্যোগ ও হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারদের আন্তরিকতার জন্যই হাসপাতালে আজ ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। হাসপাতালে এখন রোগীদের বিনামূল্যে অধিকাংশ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের উদ্দ্যোগে এ্যাম্বুলেন্স মেরামত করে তা চালু করা হয়েছে।উপঃ স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার উদ্দ্যোগে রোগীদের চিকিৎসা সেবা সহ আরো ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ কয়েকমাস পর আবারো অপারেশন চালু হবে। এতে সাধারন রোগী ও গর্ভবতী মহিলারা অনেক সুযোগ-সুবিধা পাবে।