নাগেশ্বরী প্রতিনিধিঃ
নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের আওতায় নতুন লাইন নির্মাণে সিন্ডিকেট দালাল এবং টেকনেশিয়ানরা লাখ লাখ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রাথমিক জরিপ, পরিমাপ, খুটি, মিটারসহ বিভিন্ন ধাপে প্রতি মিটারে গ্রাহককে দিতে হচ্ছে ৫থেকে ৭হাজার টাকা। বর্তমানে ভুরুঙ্গামারীতে শতভাগ নতুন লাইন নির্মাণাধীন রয়েছে। এ সুযোগে খুটি আনা এবং লাইন নির্মাণে ব্যাপক বাণিজ্য শুরু করেছে দালাল চক্ররা। লিফলেট, পোষ্টার, মাইকিং করে প্রচার প্রচারণা চালিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না এসব দালাল ও টেকশিয়ানদের দৌরাত্ব। তারা বিভিন্ন কায়দায় লাইন নির্মাণে জরিপ এবং পরিমাপের সময় গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিদ্যুৎ পেতে হলে টাকা লাগবে বলে স্থান ভেদে ৫হাজার থেকে ৭হাজার টাকা মিটার প্রতি গ্রাহকদের সাথে চুক্তি করে। পরে পরিমাপের সময় থেকে সংযোগ পর্যন্ত এই টাকা তুলে নেয় গ্রাহকের কাছ থেকে। এসব টাকা উত্তোলনের সাথে বিদ্যুতের কিছু টেকনেশিয়ান অসৎ কর্মকতা, প্রকৌশলী জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, প্রাথমিক জরিপ এবং লাইন পরিমাপে একেক প্রকৌশলীকে দিন প্রতি দিতে হয় ২০হাজার টাকা। এ টাকা দালাল মারফত যায় তাদের পকেটে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের দ্বীপেরহাট এলাকার মৃত পনির উদ্দিনের পুত্র শ্যালোইঞ্জিন মেকার মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা দ্বীপেরহাট নামক একটি লটের ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম চিলমারীর সাথে যোগসাজশ করে লাইন ও মিটার দেয়ার জন্য ৬হাজার টাকা চুক্তিতে দালালী করছে। ইতিমধ্যে গ্রাহক প্রতি ১হাজার টাকা সে নিয়েছে। এখানে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১শত ৪৫টি। এখন খুটি আনার জন্য আরও ১হাজার টাকার তাগাদা দিচ্ছে সে। গ্রাহক দুলাল, সজিব, খতিবর, মইনুল হক, আজিজুল ইসলাম, ছমীর আলী জানান, দুই মাস পূর্বে শ্যালোইঞ্জিন মেকার মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে দ্বীপেরহাটের লট থেকে ১লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং এখন খুটি আনার কথা বলে টাকা চাচ্ছে। আরো জানান, শ্যালোইঞ্জিন মেকার মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা এই লটে নিজস্ব লোক মারফত টাকা তুলে নিচ্ছে। টাকা না দিলে বিদ্যুৎ দিবেনা এমন হুমকি দিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভুরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুতের লাইন্সেস প্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ান গোলাপ উদ্দিন বিদ্যুতের নতুন লাইন নির্মাণে সিন্ডিকেট দালাল হয়ে তার নিয়োগপ্রাপ্ত বিভিন্ন টেকনেশিয়ানের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিতে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে বাড়ি, মোটরসাইকেল, ব্যাংক ব্যালেন্স করে ফায়দা লুটিয়ে নিচ্ছেন এবং গোলাপ সার্বক্ষণিক মাদক নেশায় অসক্ত থাকেন। ইলেকট্রিশিয়ান গোলাপ উদ্দিন ভুরুঙ্গামারী বিদ্যুতের এজিএম সফিউল আলম কে চুক্তিভিত্তিতে অর্থ দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। ভুরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুতের এজিএম সফিউল আলম ইতিপূর্বে কাউনিয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম পদে দুর্নীতি করার দায়ে কতৃপক্ষ তাকে ডিমোশন দিয়ে এজিএম হিসেবে ভুরুঙ্গামারী পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে পাঠায়। দালাল শ্যালোইঞ্জিন মেকার মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, বিদ্যুৎ পেতে হলে টাকা লাগে ভাই। তবে আপনার লাখ টাকার কথা বলছেন সে রকম নয় খরচা বাবদ প্রতি মিটারে ৫হাজার টাকা চুক্তিতে ১হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। এ যাবত বিদ্যুৎ লাইন আনতে আমার ২৫হাজার টাকা ভুরুঙ্গামারীতে পল্লী বিদ্যুৎ প্রকৌশলীকে দিতে হয়েছে। এছাড়াও নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী, হাসনাবাদ, দক্ষিন রামখানায় একই কায়দায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালাল চক্র। কুড়িগ্রাম লালমনির হাট পল্লী বিদ্যুতের ব্যাবস্থাপক জানান, দালালদের দৌরাত্ব এবং টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আমরা সচেতনতামূলক মাইকিং পোষ্টারিং চালিয়েও রোধ করতে পারছি না। তদন্ত সাক্ষেপে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *