মোঃ জাহিদ আলী,লালপুর(নাটোর)প্রতিনিধি ঃ
নাটোরের লালপুরের মাঝগ্রামে প্রায় এক হাজার ৬২৯ টাকা কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয়েছে বৃহত্তম রেল জংশন ও মাঝগ্রাম থেকে ঢালারচর রেল লাইন। রেল জংশনটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় লালপুরসহ পাশ্ববর্তী উপজেলা এবং পাবনা জেলার হাজার হাজার মানুষ। লালপুরের দুয়ারিয়া, এবি, ঈশ্বরদী, কদিমচিলান ইউনিয়নসহ পুরো উপজেলাবাসী খুশিতে আত্মহারা। এছাড়াও পাশ্ববর্তী বাগাতিপাড়া,বড়াইগ্রামসহ নাটোর জেলার সকল এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। এছাড়াও বড়াইগ্রামে রেলপথ নেই বলে জংশনটি নিকটবর্তী হওয়ায় তারা সব থেকে বেশি উপকৃত হবে। নতুন এই রেল জংশনটি চালু হলেই পাল্টে যাবে জংশন এলাকাসহ নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান। রেলপথের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন যায়গার যাতায়াতের পথ এখন তাদের হাতের মুঠোয়। অতি কম খরচেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুরসহ সকল বিভাগে তারা চাকুরী, ব্যবসাসহ ভ্রমণ করতে পারবে। ইতিমধ্যেই জংশনের আশেপাশে বাজারগুলো জমে উঠেছে। তবে রেল জংশনের নির্মাণকাজ শেষ হলেও জংশনের সাথে সংযোগকৃত রাস্তাগুলো পাকাকরন হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই রাস্তাগুলো পাকাকরন করা হবে বলে জানান কর্তপক্ষ। এদিকে মূল জংশন নাটোরের লালপুরে হলেও উদ্বোধন পাবনা জেলায় হতে যাচ্ছে শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলেন পাবনার ভিতরে শুধু রেল লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মূল জংশনটি তো লালপুরের ভিতর। এক্ষেত্রে লালপুরেই উদ্বোধনটি হতে হবে। জংশনসংলগ্ন বাজারের চা বিক্রেতা আজিম প্রাং বলেন, এই জংশনটি চালু হলে আমরা ব্যপক উপকৃত হবো। তবে পাবনা জেলাতে উদ্বোধন আমরা কিছুতেই মানতে পারছিনা। মাঝগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১৯৭৩ সালে তৎকালীন আ’লীগ সরকারের রেল মন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী প্রায় ১২৪ বিঘা জমির উপর মাঝগ্রাম রেল স্টেশন থেকে নগরবাড়ি পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করেন। তখন উত্তরাঞ্চলের সমস্ত ট্রেন এখানে স্টপিজ দিতো। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে এখানে দুই একটি ট্রেন থামলেও অধিকাংশ ট্রেন স্টপিজ দেয়নি। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসাবে মাঝগ্রাম-ঢালারচর রেলপথ ও মাঝগ্রাম রেল জংশন করে দেন। এটি নির্মাণ করতে এক হাজার ৬২৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই জংশনটি চালু হলে সব ট্রেনগুলো এখানে থামবে। এই এলাকার সকল মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান রাজীব বলেন, এই এলাকার অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এই জংশনটি চালু হলে তারাই বেশি উপকৃত হবে। এই এলাকার শিক্ষার মান উন্নত হবে। দুয়ারিয়া ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই জংশনটি উদ্বোধন হবে। এটি উদ্বোধন হলে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক অল্প খরচে এবং অল্প সময়ের মধ্যে হবে। কিন্তু উদ্বোধন পাবনাতে হবে এটি খুব কষ্টদায়ক। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাঝগ্রাম রেল-জংশন থেকেই উদ্বোধন করেন। এ বিষয়ে নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাঝগ্রাম রেল জংশনটির কাজ শেষ। কিছুদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষামূলক একটি ট্রেন উদ্বোধন করেন। আমি রেলমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি তিনি আগামী এক দেড় মাসের মধ্যেই জংশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন। তবে রেল জংশনটি আমার এলাকায় হলেও রেল লাইনের অধিকাংশই পাবনা জেলার মধ্যে। আর সে কারনে পাবনাতে এটি ্উদ্বোধন হবে। তবে যেহেতু মূল জংশনটি আমার সংসদীয় এলাকায় সেহেতু এখানে উদ্বোধন হলেই ভালো হতো। আর জংশন এলাকায় যে রাস্তাটুকু কাচা আছে তা শীঘ্রই পাকাকরন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *