কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারল একেএম নাজমুল হাসান কুড়িগ্রামের রৌমারীর ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্ত ফাঁড়ি পরিদর্শন করেছেন। শনিবার ২ ডিসেম্বর বেলা ২টার দিকে হেলিকপ্টারযােগে তিনি আসেন এবং ফাঁড়ি পরিদর্শন করেন। এসময় হাজারও উৎসুক জনতা দেখতে ভীড় জমায়। 

এদিকে ফাঁড়ি পরিদর্শনকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কােন প্রকার ছবি তুলতে দেননি এবং তথ্যও দেয়া হয়নি। পাশাপাশি ফাঁড়ি এলাকায় প্রবেশে বাধা প্রদান করেন দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা। এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকদর মাঝে ক্ষােভ এবং মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

বিজিবি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিজিবি মহাপরিচালক আজ সরাইল রিজিয়নের আওতাধীন শ্রীমঙ্গল এবং ময়মনসিংহ সেক্টর ও জামালপুর ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ শ্রীমঙ্গল ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বিজিবি সদস্যদের অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালক কোয়ার্টার গার্ডে সালাম গ্রহণ, বৃক্ষরোপন এবং বিজিবি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি মাদক ও অবৈধ অস্ত্র পাচার প্রতিরোধ, চোরাচালানসহ সকল প্রকার সীমান্ত অপরাধ দমন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে বিজিবি সদস্যদের পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করার নির্দেশনা দেন। এছাড়াও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালনের জন্য সদা প্রস্তুত থাকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

বিজিবি মহাপরিচালকের পরিদর্শনকালীন বিজিবি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সরাইল রিজিয়ন কমান্ডার, শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার, ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ  অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রৌমারী প্রেসক্লাবের সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজা বলেন, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একজন বিজিবির মহাপরিচালক আমাদের এই প্রত্যন্ত এলাকায় আসলেন অথচ উপজেলা এবং জেলার কোন সাংবাদিকদের জানানো হয়নি। খবর পেয়ে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বাঁধার মুখে পড়তে হয়। সীমান্ত এলাকায় মাদক,চোরাচালানসহ নানাবিধ সংবাদ প্রচার করে এবং এসব রোধে স্থানীয় বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু আজকে মহাপরিচালক পরিদর্শন করে গেলেও স্থানীয় সাংবাদিকদের কোন মতবিনিময় না করাটা খুবই দুঃখজনক।

রাজিবপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সহিজল ইসলাম সজল বলেন, বিজিবির মহাপরিচালক আসার খবর আমি রাজিবপুর কোম্পানি কমান্ডারের সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাইনি। এজন্য আমরা যাইনি। আমরা বিজিবি’র মহাপরিচালকের সাথে সীমান্তের কাটাতার কাটা, বিএসএফ’র হাতে নির্যাতন, সীমান্তে গুলিতে নিহতের ঘটনাসহ ভারত থেকে হাতি প্রবেশ করে বাংলাদেশের কৃষকের ফসলহানি, ঘরবাড়ির ক্ষতি সাধন করাসহ ইত্যাদি সমস্যা ও সমাধানের বিষয় মতবিনিময় থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ,২০০১সালের ১৮ এপ্রিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী গ্রামে ঢুকে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতােভয় তৎকালীন বিডিআর ও গ্রামবাসীর যৌথ প্রতিরােধে পর্যুদস্ত হয় আগ্রাসনকারী বিএসএফ। নিহত হন বাংলাদেশের তিন বীর সাবেক বিডিআর সদস্য। ভারতীয় ১৬জন বিএসএফ সদস্য নিহত হয়। বিএসএফর তান্ডব পুড়ছিল বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯টি ঘর বাড়ি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *