আব্দুল সাত্তার টিটু চট্টগ্রাম ব্যুরো
উম্মে কাওসার এপি চট্টগ্রামের একজন উদ্দীয়মান ও প্রতিশ্রুতিশীল জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী। যিনি চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সংগীত শিল্পী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রামের যেকোন প্রোগ্রামে গানের প্রশ্ন আসলে যে ক’জন শিল্পীর নাম সামনের সারিতে আসে তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ইতোমধ্যে উম্মে কাওসার এপির খ্যাতি চট্টগ্রামের গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশে ছড়িয়েছে।

সাম্প্রতিক চট্টগ্রামের লোকাল প্রোগ্রামে গান করা শিল্পী আনিকা ইয়াসমিন ও তার স্বামী মাদক ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম (প্রকাশ ডি কে আমির) কন্ঠ শিল্পী উম্মে কাওসার এপিকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেছেন একাধিক বার। এমনকি এই শিল্পীর প্রোগ্রামে হামলার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।

জানা যায়, আমিরুল ইসলাম ২০২১ সালের ৭ মে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর হাতে মাদকসহ আটক হয়। এইদিকে দিন যতই বাড়ছে আনিকা-আমিন দম্পতির রোষানলে এপির জীবন রীতিমতো অতিষ্ঠ করে তুলছে। এপি ভালো নেই- এমনটিই বলছে এপির স্বামী মো:আজিজুর রহমান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গানের সূত্রধরে এপির সাথে পরিচয় আনিকা ইয়াসমিন ও তার স্বামী আমিরের সাথে। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এরপর একসাথে নানা প্রোগ্রামে দেখা কথোপকথন ও সম্পর্কের গভীরতা। ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। দিনে দিনে এপির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। প্রায় প্রতিরাতে এপি চট্টগ্রামের প্রায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও নানা প্রোগ্রামে সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন। মূলত এপির জনপ্রিয়তাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জীবনে। এপির জনপ্রিয়তা যেন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিলনা আনিকা-আমির দম্পতি।

সূত্র মতে, এপির জনপ্রিয়তা ও প্রোগ্রামে প্রাপ্তির সংখ্যা যত বাড়তে থাকে আনিকা ইয়াসমিনের হিংসাত্মক প্রভাবও বাড়তে থাকে এপির উপর। একপর্যায়ে আনিকা এপির জনপ্রিয়তা রুখতে তার স্বামীকে নানাভাবে প্ররোচিত করতে থাকেন। স্বামী আমিরের স্ত্রীর প্ররোচনায় এপির ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। এপিকে ক্ষতি করার জন্য কুৎসা রটিয়ে বেড়ায় নানা মহলের কাছে। এমনকি এপির স্বামীর কাছেও বিভিন্ন সময় এপির বিরুদ্ধে কথা বলে স্বামীর কান ভারী করেন এই দম্পতি।

সর্বশেষ আনিকা-আমির দম্পতির হিংসাত্মক রূপের স্পষ্টতা পায় চলতি বছরের ১০ মে নাসিরাবাদ কনভেনশন হলে। এপি ও আনিকার একটি প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে একই প্রোগ্রামে গান করার কথা। ঐ অনুষ্ঠানে এপির জনপ্রিয়তা আনিকাকে এত বেশি আক্রমণাত্মক করে তুলে যে একপর্যায়ে আমির এপিকে প্রোগ্রামে না যাওয়ার জন্য হুমকি প্রদান করে। এপি হুমকির পরেও প্রোগ্রামে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় থাকলে আমির ক্ষিপ্ত হয়ে ০১৬৭৭০৮৭০৯০ নাম্বার থেকে কল করে এপির স্বামীকে শাসাতে থাকে। প্রোগ্রামে গেলে এপি ও তার পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। এপি নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে ১০ মে নগরীর খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার জিডি নাম্বার ৮৪৮।

সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, চলতি বছরের ১০ মে দিবাগত রাতে নাসিরাবাদ কনভেনশন হল থেকে নেভি অফিসার্স ক্লাবে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এপি ও তার স্বামী বের হলে নাসিরাবাদ কনভেনশন হলের মূল গেইটে পূর্বপরিকল্পিতভাবে উৎপেতে থাকা আনিকার স্বামী আমির ও তার ১০/১২ জন সন্ত্রাসী নারী-পুরুষ ধরালো অস্ত্র নিয়ে এপি দম্পতির গতিরোধ করে। এপিকে মারাত্মকভাবে জখম করে। এমনকি এপিকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য গলা টিপে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আশেপাশের লোকজনের আত্মচিৎকারে এপিকে উদ্ধার করে আয়োজকরা। এপিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনায় ১১ মে নগরীর পাঁশলাইশ থানায়‌ সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নাম্বার ১০০৩। পরবর্তীতে কন্ঠশিল্পী উম্মে কাওসার এপি আমিরুল ইসলাম প্রকাশ ডি কে আমির ও আনিকা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে একটি সিআর মামলা করেন। যার নাম্বার ৩৬৫/২০২৩।

উম্মে কাওসার এপি আমিরুল ইসলাম প্রকাশ ডিকে আমির ও তার স্ত্রী আনিকা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার চেস্টার অভিযোগ করে বলেন, আনিকা ও ডি কে আমিন আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে নানা ভাবে আমাকে নাজেহাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমার প্রোগ্রাম যতো বাড়ে তাদের প্রতিহিংসার আগুনও যেন গাণিতিক হারে বাড়ে। ইতিমধ্যে এই দম্পতি বিভিন্ন ভাবে আমার নামে কুৎসা রটনা করে আসছিল সংঙ্গীতঙ্গনে । দিন যতই যাচ্ছে তাদের বেপরোয়া মনোভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সম্প্রতিক সময়ে আমিরুল ইসলাম দম্পতি আমাকে বিভিন্ন সময় মুঠোফোনে কল করে প্রাননাশের হুমকি প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। আমি আনিকার চেয়ে ভালো গান গাই। তার চাইতে দেখতেও ভালো সুন্দরী। সব মিলে সে আগে থেকে ক্ষোভ পোষণ করতো। আমার দেওয়া একটি স্টাটাসের জের ধরে আমার সংসার ভাঙতে চেয়েছিল এই দম্পতি। ব্যর্থ হয়ে হত্যার পথ বেছে নেয়।

এসময় কান্নায় ভেঙে পড়া এই কন্ঠশিল্পী জানান, আমি ও আমার পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার উপর হামলার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক এই ঘটনার বিচার চাই। আগামীতে যেন এই ধরনের ঘটনা কোন কন্ঠশিল্পীর জীবনে না ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে আমিরের ফোনে একাধিক বার ফোন করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *