চিলমারী প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা বাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে লালমনিরহাটের তিস্তা জংশন পর্যন্ত রেলপথে সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনের চলাচল প্রায় ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত বছরের ৮ মার্চ থেকে এই সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই দিন দুপুরে রমনা বাজার থেকে তিস্তা জংশন হয়ে পার্বতীপুরের উদ্দেশ্যে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি।

এ অবস্থায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনা ভাইরাসের পাশাপাশি ইঞ্জিন সংকট, চালক সংকট, স্টেশন মাস্টার ও জনবল কম থাকায় পুনরায় ওই সেকশনে ট্র্রেন চলাচল শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

ফলে দারিদ্র পীড়িত এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ কম টাকায় যাতায়াত এবং মালামাল পরিবহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, তিস্তা জংশন থেকে রমনা বাজার পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার রেলপথে ৮ টি স্টেশন রয়েছে। স্টেশনগুলো হচ্ছে সিঙ্গারডাবরি, রাজারহাট, টোগরাইহাট, কুড়িগ্রাম, পাঁচপীর, উলিপুর, বালাবাড়ি ও রমনা বাজার। এরমধ্যে শুধু কুড়িগ্রাম স্টেশন চালু আছে। অবশিষ্ট ৭টি স্টেশনে এখন তালা ঝুলছে।

চিলমারী বন্দরের ব্যবসায়ী গওছল হকসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, সাশ্রয়ী মাসুলে নিরাপদ যাতায়াত এবং মালামাল পরিবহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

জেলা রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেন জানান, গত ১৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামে এসেছিলেন সরকারি রেলপথ পরিদর্শক অসীম কুমার তালুকদার। রাজারহাট স্টেশনে তার সাথে দেখা করে ট্রেনটি চালুর জন্য স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

এদিকে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় সংস্থাপন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, বর্তমানে বুধবার বাদে প্রতিদিন কুড়িগ্রাম-ঢাকা-কুড়িগ্রাম আন্তঃনগর ট্রেন কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস যাতায়াত করছে। এছাড়া সন্ধ্যায় রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী নিয়ে কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত একটি শাটল ট্রেন যাতায়াত করছে।

এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, ইঞ্জিন, ইঞ্জিন চালক, স্টেশন মাস্টার এবং পয়েন্টম্যান সংকটের কারণে ওই সেকশনে ট্রেন চালু করার সক্ষমতা এ মুহূর্তে নেই। তবে চেষ্টা চলছে। জনবল নিয়োগসহ অন্যান্য সংকট সমাধান হলে পুনরায় ওই সেকশনে ট্রেনের চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *