ফারহানা আক্তার,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ও খনন কাজ অন্যতম। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চল কর্তৃক জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল, কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলায় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক দিকে থেকে জয়পুরহাট জেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই জেলার সন্নিকটেই ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সোমপুর মহাবিহার বা পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার অবস্থিত। এছাড়াও এ জেলার পাচবিবি উপজেলায় ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ পাথরঘাটা প্রত্নস্থল অবস্থিত। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব উপলব্ধি করে এ জেলায় এবারের জরিপ কাজের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।

উক্ত জরিপ ও জরিপ পরবর্তী গবেষণা কাজে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোছাঃ নাহিদ সুলতানা জরিপ কাজের পরিচালক এবং পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম জরিপ কাজের দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উক্ত জরিপ কাজে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একজন গবেষণা সহকারী, নকশা অংকনকারী, আলোকচিত্রকর ও পাহাড়পুর জাদুঘরের কর্মচারীগণসহ অন্যান্য ব্যক্তিগণ সহযোগী হিসেবে রয়েছেন।

০৩-১১-২০২৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখ ক্ষেতলাল উপজেলা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপ কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ কাজের মাধ্যমে এ অঞ্চলে শত বছরের অধিক কোনো প্রাচীন স্থাপনা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, ঢিবিসহ প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব আছে এমন স্থাপনার সন্ধান করা হবে। জরিপ চলাকালে জরিপ দল উক্ত উপজেলার প্রতিটি গ্রাম / মহল্লা এমনকি প্রতিটি রাস্তা পরিদর্শন করবেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু পাওয়া গেলে প্রতিবেদন আকারে এ বিষয়ে অধিদপ্তরকে অবহিত করা হবে। চলতি অর্থ বছরে (২০২৩-২০১৪ অর্থ বছর) জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল, কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও গ্রামে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান চালিয়ে অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

জরিপে প্রাপ্ত সকল তথ্য উপাত্তের (স্থানীয় প্রচলিত গল্প, ঐতিহাসিক গুরুত্ব, স্থাপত্য বিবারণ, মাপজোক, ড্রয়িং ও আলোকচিত্র) ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে গেজেট প্রকাশ করে সরকারের অনুকূলে আনার সুপারিশ করা হবে। বাংলার প্রাচীন ইতিহাসের এসব সাক্ষ্য এখনই সংরক্ষণ করা না হলে কালের কড়াল গ্রাসে মূল্যবান এ প্রত্নসম্পদ খুব দ্রুত ধ্বংসের দিকে চলে যাবে। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য আমাদের গর্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *