কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে তেলিয়ানিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৫৫জন ব্যাক্তির স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. নুর হোসেন প্রধান। অভিযোগে জানা যায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহা. হুমায়ুন কবীর দীর্ঘদিন যাবৎ ওই বিদ্যালয়ে প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতি করে আসছে। শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন উপবৃত্তির তালিকা করার সময় ওই প্রধান শিক্ষক ২শ টাকা করে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকী সকল শ্রেণিসহ ৫ম শ্রেণিতেও বার্ষিক পরীক্ষার পরিবর্তে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়া হয়নি ওই বিদ্যালয়ের। অথচ প্রত্যয়নপত্র দেয়ার নাম করে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২শ টাকা করে উত্তোলন করলেও সে প্রত্যয়নও দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের। এ ব্যাপারে ওই প্রধান শিক্ষককে বলতে গেলে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয় কমিটির সদস্য অভিযোগকারী নুর হোসেনের সাথে। ঘটনাগুলি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকেও অবগত করেন সদস্য নুর হোসেন। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের বই প্রদানের সময় সকলের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন এবং স্কুল ফিডিং এর বিস্কুট প্রদানেও ব্যপক অনিয়ম করেন প্রধান শিক্ষক।

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কোনো কাজ করতে বা যে কোনো প্রয়োজনে বিদ্যালয়ে গেলে তাদের কাজ সঠিকভাবে না করে উল্টো তাদের সাথে অসৌজন্যমুলক করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে আরও জানা যায় প্রধান শিক্ষক স্লিপ ফান্ডের টাকা উত্তোলন ও খরচেও অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন এবং ক্ষুদ্র মেরামতের কাজেও ব্যপক দুর্ণীতি ও অনিয়ম করেছেন।

চলতি বছরের ২২ মার্চ এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের নিকট অভিভাবক সদস্য নুর হোসেন হিসাব চাইতে গেলে তাকে হিসাব না দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়েছেন এবং নানাভাবে অপমান অপদস্ত করেছেন। এ সময় বিদ্যালয়ের বিদ্যোৎসাহী সদস্য রইচ উদ্দিন প্রধান দুলু বিদ্যালয়ের এই কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার দাবি তুললে এতে প্রধান শিক্ষক সহমত প্রকাশ করে এ্যাডহক কমিটি করার কথা জানান। এছাড়াও ওই বিদ্যোৎসাহী সদস্য সেখানে অনেকের সামনে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার বসার চেয়ার তুলে নুর হোসেনের মাথায় নিক্ষেপ করে লাঞ্ছিত করেন। 

এদিকে কয়েকদিন আগে অভিভাবক সদস্য মোস্তফার উপস্থিতিতে রাতের বেলা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরজামান প্রধানকে ফোন দিয়ে স্লিপের টাকা কাজের পর বাড়তি থাকলে তা আরও দুজনকে ভাগাভাগি করে নেয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু বিষয়টিতে অমত পোষণ করেন সভাপতি।

এ ব্যাপারে অভিযোগ পত্রে “বিষয়ের ঘটনাগুলো সত্য, বিধায় ইহার সুব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক” লিখে সুপারিশ করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নূর জামান প্রধান।
বিষয়টি জানতে প্রধান শিক্ষক হুমায়ূন কবীরকে ফোন করে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি বলেন হ্যাঁ কী হয়েছে, কী সমস্যা বলেন? তখন তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছি, পরে ফোন দেন-বলে ফোন কেটে দেন। পরদিন আবারও একাধিকবার ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর আহমেদ মাছুম বলেন, এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি এখনও তদন্ত প্রতিবেদন পাইনি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার অধিকারীকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *