mail.google.com
হারুন উর রশিদ সোহেল রংপুর :

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্থানী হানাদারদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হওয়া কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধোদের রক্তে ভেজা স্মৃতিবিজড়িত রংপুরের তামপাট দমদমা বধ্যভূমি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও এখনও সেটা অরক্ষিত। অযতœ আর অবহেলায় পড়ে থাকা এই বধ্যভূমিতে অবাধে বিচরণ করছে গরু ছাগল। চলছে রাতের অধারে অসামাজিক কার্যকলাপ মদ জুয়ার আসর। এনিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই বধ্যভুমিটির তত্ত্বাবধানে থাকা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কর্তৃপক্ষের।

রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের তামপাট দমদমা ব্রিজের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কারমাইকেল কলেজের ৬ শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শত শত নারী-পুরুষকে ধরে এনে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।

দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকার পর ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর কারমাইকেল কলেজ শিক্ষক পরিষদ সেখানে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করেন। ফলকটির চারপাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় গাছের গুঁড়িসহ ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে।

২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষকদের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমিটির দায়িত্ব নেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রশাসন। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগে প্রথমদিকে কিছু মাটি কেটে সাইনবোর্ড টাঙানো হলেও দায়িত্ব নেয়ার ৫ বছর পরও সেটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি বর্তমানে সেখানে নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন সাইনর্বোডও। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করায় শহীদের রক্তের ললাটে পবিত্র বধ্যভূমিট আজ পরিণত হয়েছে গোচারণ ক্ষেতে ও মাদকসেবীদের আখড়ায়।

অপরদিকে, এই বধ্যভূমিতে কোনো স্থাপনা না থাকায় দুইদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। ফলে বিঘিœত হচ্ছে বধ্যভূমির প্রকৃত মর্মার্থ।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগেই এই বধ্যভূমিতে স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণ করা হোক।
বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন রংপুরের প্রবীণ সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা সাবেক এমপি খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল।তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েও বধ্যভূমিটি অবহেলায়-অযতেœ পড়ে থাকাটা দুঃখজনক। বধ্যভূমিটি দ্রুত সংরক্ষণের ব্যাপারে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে থাকা একমাত্র বধ্যভূমিটির এই বেহাল দশা সর্ম্পকে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবী বলেন, বধ্যভূমিটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজনকে দায়িত্ব দেয়া ছিল। বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে বলতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *