আশানুর রহমান আশা বেনাপোল
ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় শত শত রফতানি পণ্য বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে বেনাপোল বন্দর মহাসড়ক,বাইপাস সড়ক সহ বেনাপোলের প্রতিটি আবাসিক এলাকা জুড়ে। একটি বাইসাইকেল চলাচলেরও কোন ফাঁক-ফোঁকড় নেই।

স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ, কর্মজীবি মানুষ সময়মত তাদের কর্মস্থল কিংবা গন্তব্য স্থানে পৌছতে পারছে না বিশেষ করে অসুস্থদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে নিয়ে যেতে পারছেন না,মোটকথা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ। ১৫ দিন যাবৎ এভাবেই চলছে বেনাপোল পৌর এলাকা। ফলে,ভয়াবহ যানজটের কারনে অতীষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষের জনজীবন । যানজট নিরসনে পুলিশের নেই কোন তাবেদারী কিংবা ট্রাফিক পুলিশের নেই কোন তদারকি, তাই গভীর খবে বর্তমান বেনাপোলের মানুষ। সরেজমিনে যানজটের কারন হিসেবে জানা গেল, ভারত প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য রফতানি করলেও বাংলাদেশি পণ্য নেওয়ার ক্ষেত্রে তারা বরাবরই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক রপ্তানী পণ্য গ্রহণ করছে তারা। জায়গা সংকটের কথা বলে তারা বংলাদেশি পণ্য গ্রহণ করছে না। ফলে,বেনাপোল বন্দর এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে পণ্য বোঝাই যানজটের।

শত শত রপ্তানী পণ্য বোঝাই ট্রাক ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রাস্তা জ্যাম করে দাড়িয়ে আছে। স্থানীয়রা বলছেন,দীর্ঘ দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খুলতে শুরু করেছে, রাস্তায় যানজটের যে ভয়াবহ অবস্থা তাতে বাচ্চারা সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারবে না। এদিকে,বিদেশগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াতের একমাত্র এই রাস্তাটিতে যানজট থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। বেনাপোল বাস স্ট্যান্ড থেকে আন্তর্জাতিক বেনাপোল চেকপোষ্টে রিক্সাযোগে পৌছেতে যেখানে ৫ মিনিট সময় লাগে,যানজটের কারনে সেখানে দেড় থেকে দু’ঘন্টা সময় লাগছে। বেনাপোল ট্রাক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো: শাহীন জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে সয়াবিনের ভূষি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং গার্মেন্টস ঝুট ভারতে রফতানি হচ্ছে।

যার কারনে প্রতিদিন এসব পণ্য নিয়ে ২৫০-৩০০ ট্রাক ভারতে প্রবেশের জন্য বেনাপোল বন্দরে আসছে। এ কারণে বেনাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। আর তা ছাড়া বেনাপোল বন্দরে রফতানি পণ্যের ট্রাক রাখার কোনও টার্মিনাল নেই বেনাপোলে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন স্ট্রাকশন, চাউলের ভূষিসহ অন্যান্য পণ্য রফতানি হচ্ছে ভারতে। ফলে প্রতিদিন এসব পণ্য বোঝাই প্রায় ৩০০টি ট্রাক ভারতে প্রবেশের জন্য বেনাপোল বন্দরে আসছে। কিন্তু ভারত প্রতিদিন নিচ্ছে মাত্র ১৫০ ট্রাক রফতানি পণ্য। এই কারণেই এত ট্রাক বেনাপোলে আটকে থাকছে যার ফলে বাড়ছে ভোগান্তি। বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য গত কয়েকদিন আগে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টরা বৈঠকে বসেছিলেন। ভারতীয় বন্দর ব্যবহারকারীরা দু‘দেশের কাস্টমস, বন্দর, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রান্সপোর্ট নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে বৈঠক করার সম্মতি জানিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব উদ্ভূত সমস্যার সমাধান আসবে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *