এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখা ও অল্প খরচে লাভবান হওয়ায় স্বপ্ন সফল দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পান চাষীরা। এতে ভাগ্যের চাকা ঘুরছে চাষীদের। ফলে দিনদিন এই উপজেলায় পানের বরজের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খানসামা উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৭.৬ একর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামেই ৯৫ ভাগ পানচাষ করা হয়। বর্তমানে পুরো উপজেলার প্রায় ৩০টি পরিবার এই পানচাষের সাথে জড়িত রয়েছে।

বিঘাপ্রতি পানের বরজে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে পরবর্তী বছর থেকে চাষীরা প্রতি বছর লাভ করছেন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বলে জানায় তাঁরা।

জানা যায়, গত ১০ বছর থেকে বর্তমানে উপজেলায় পানের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে গোয়ালডিহি ইউনিয়নের দুবলিয়া গ্রামের অনেক চাষী বাপ-দাদার রেখে যাওয়া পান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এতে ধান, রসুন, ভুট্টা ও আলু চাষের সাথে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছেন বিভিন্ন জাতের পান চাষে।

পানচাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এখানে মিষ্টি ও সাচি পান চাষ করা হলেও মোট চাষের ৮০ ভাগই মিষ্টি পান চাষ করি আমরা। এখানকার সব পরিবার এক সময় ব্যবসা আর শখের বসে পানের বরজে পানচাষ শুরু করেন। গ্রাম কিংবা শহরে অতিথি আপ্যায়নে এ পানের এখনো চাহিদা রয়েছে। তাই পান চাষ করে ভালোই লাভবান হওয়া যায়।

দুবলিয়া গ্রামের পানচাষি রঞ্জনা রায় বলেন, পান চাষই আমাদের সংসারের মূল আয়ের উৎস। আমি ও আমার স্বামী দু’জনেই পানের বরজে কাজ করি। ৩২ বছর ধরে পানের বরজ করে আসছি। বর্তমানে ২৩ শতক জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতি হাটে সপ্তাহে দুই দিন ১৩-১৫ হাজার টাকার পান বিক্রি করি।

দুবলিয়া গ্রামে পান কিনতে আসেন পান ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ। তিনি জানান, এখানকার পান সুস্বাদু হওয়ায় এ পানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এ এলাকা থেকে পান কিনে বাজারজাত করি। এতে দেখেছি এই এলাকার অনেকেই পানচাষ করে এখন স্বাবলম্বী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় বলেন, এই উপজেলার মাটি পানচাষের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পান চাষ করে চাষিরা। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামের চাষীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানের চাষ করছে। প্রতিবছর পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *