কলকাতা প্রতিনিধিঃ

২০ ডিসেম্বর ২০২২ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ২৮তম জেলা বইমেলার শুভ উদ্বোধন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অধ্যাপক ব্রাত্য বসু। শনিবার জেলা বইমেলার মঞ্চে জেলার বিশিষ্ট কবিদের সঙ্গে কবিতা পাঠ করলেন কবি ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ।

সাড়ম্বরে শুরু হয়েছে ২৮তম দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বইমেলা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার শুভ সূচনা করেন। মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিবহন প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল, জেলা সভাধিপতি সামিমা সেখ, বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও গৌতমকুমার দাস, বারুইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শক্তি রায়চৌধুরী, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রকাশ মণ্ডল ও জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ জয়ন্ত ভদ্র প্রমুখ। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বই পড়ার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি রসিকতার সঙ্গে বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি বই আর বউ কখনো কাউকে ধার দেবেন না।’ গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বারুইপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এখানকার মাটি উর্বর, বইয়ের ফসল ফলবে আমার ধারনা। আপনারা বইকে সঙ্গী করুন, আমি আপনারদের পাশে আছি। জেলার গ্রন্থাগারগুলিকে আরো সাজিয়ে দেব।’ অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার সমৃদ্ধশালী গ্রন্থাগারের উল্লেখ করে জানান, প্রতিটি ঘরে ঘরে লাইব্রেরি গড়ে তুলুন। বই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখবে। মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হবে। 

মেলায় এবার বুকস্টলের সংখ্যা ৬০। লিটল ম্যাগাজিনের স্টল ছাড়াও জেলার লেখকদের বই নিয়ে একটি আলাদা স্টলের ব্যবস্থা করেছেন মেলা কর্তৃপক্ষ। এছাড়া হ্যান্ডলুম ও খাদ্যদ্রব্যের স্টলও রয়েছে। 

মেলা চলবে ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ পর্যন্ত। পয়লা দিনেই মেলায় মানুষের ভিড় দেখা গেল। প্রকাশকেরাও খুব খুশি। তাদের আবেদন, বারুইপুরে এভাবেই প্রতিবছর বইমেলা হোক। বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক গৌতমকুমার দাসও স্বীকার করেন, বারুইপুরে প্রতিবছর বইমেলা হোক, তাঁরা চান। পুরসভার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান শক্তি রায়চৌধুরীরও ইচ্ছে সংস্কৃতির শহর বারুইপুরে ফিবছর বইমেলা সবাই উপকৃত হবেন। লিটল ম্যাগাজিন স্টলের আহ্বায়ক গৌতম মণ্ডল নিজে প্রচুর পরিশ্রম করে ছোটো পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের এই মেলায় সামিল করেছেন।

বইমেলার নানাদিনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, কবি-সাহিত্যিক সম্মেলন, নাটক ইত্যাদির আয়োজন রাখা হয়েছে। 

রাজা রামমোহন রায়ের ২৫০ বছর জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বলেছেন ড. আশীষ খাস্তগীর ও ড. সনৎকুমার নস্কর। কিশোর সাহিত্য ও আবোলতাবোলের ১০০ বছর নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন সাহিত্যিক জয়দীপ চক্রবর্তী ও শিশু সাহিত্যিক আনসার উল হক। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর মূল্যবান বক্তব্য রাখেন বলেছেন অধ্যাপক ড.মীর রেজাউল করিম। এছাড়া কবি মধুসূদন দত্তর ২০০ বছর নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন ড. ঈশা দেবপাল ও ড. মনোরঞ্জন সরদার। মানুষের জন্য আইন কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে বক্তব্য রাখেন হিউম্যান রাইটস কমিসনের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ গ্রন্থাগার ব্যবস্থার সেকাল একাল নিয়ে বলেন ড.অরূপ বিজলী ও ড. রফিক শেখ। 

এবার কবি সম্মেলনে জেলার ১০০ জন কবি কবিতা পড়েছেন। তাদের মেমেন্টো, ব্যাগ, অর্থ ও মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। সঞ্চালক ছিলেন হাননান আহসান ও শান্তিব্রত চট্টোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *