নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় গরুর ছাড়পত্র নিয়ে কাষ্টম ও বিজিবির দ্বন্ধে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার ধলডাঙ্গা, শালঝোড় ও দিয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে আসা করিডোরের কাগজ না থাকায় কয়েক‘শ ভারতীয় গরু আটক করে বিজিবি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শর্তসাপেক্ষে গরু গুলো ছেড়ে দেয়। ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায়ই এমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।
কাস্টমস কতৃপক্ষ জানায়, ভারতীয় গরু সীমানা পেরিয়ে আসার পর নির্ধারিত বিটে (খাটাল) রেখে সেখানে ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গরুর ছাড়পত্র দেয়ার কথা। এজন্য বিটের লোকজন গরু প্রতি ২০ টাকা নেবেন। কিন্তু এখানে দিলরুবা সানজিদা ট্রেডিং কোম্পানী লি. নামের বিট কর্তৃপক্ষ প্রতি গরুতে নিচ্ছেন ১শ টাকা করে। এদিকে কাস্টমস বিভাগ গরুর সংখ্যা অনুযায়ী ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী এনছার আলী, শফিয়ার রহমান বলেন, কাস্টমসের লোকজন তাদের নির্দিষ্ট লোক ছাড়া গরুর করিডোরের কাগজ দেয়না। এখানে ব্যবসায়ী অনেক গরু আসে কয়েক ‘শ। স্লিপ দেয় এক দেড়‘শ। এ সুযোগে বিটের লোকজন টাকা বেশি নিচ্ছে। বিটে গরু রাখারও কোন জায়গা নেই। তবে সবকিছুর মুলে রয়েছে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষের অবহেলা। তাদের কারনে শত শত গরু ব্যবসায়ী হয়রানীর স্বীকারসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
ভারতীয় গরুগুলোর অধিকাংশ করিডোরের মাধ্যমে ভুরুঙ্গামারী হাটে কেনাবেচা হয়। এরপর চলে যায় দেশের বিভন্ন জেলায়। কাষ্টমস বিভাগের কর্মকর্তারা বিটের কাছাকাছি বসে করিডোরের কাগজ দেবার কথা। কিন্তু তা না দিয়ে তাদের মনোনীত ব্যক্তি কাস্টমসের করিডোরের ছাড়পত্র কুড়িগ্রাম অফিস থেকে সরবরাহ করে ব্যবসায়ীদের দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ব্যক্তি জানান, মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের দেয়া গরুর সংখ্যা অনুযায়ী কুড়িগ্রাম কাষ্টম কর্তৃপক্ষের নিকট করিডোরের কাগজ নিতে গেলে তারা বিজিবির স্লিপ চায়। স্থানীয় বিজিবি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া স্লিপ দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
কাস্টমসের স্লিপ না পাওয়ার কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাগলার হাট মোড়ে শতশত গরু আটক করে বিজিবি। করিডোরের কাগজ ছাড়া গরু ছেড়ে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এঅবস্থায় রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে পড়ে এবং ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজহারুল ইসলাম ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে আগামী হাট থেকে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ জয়মনিরহাটে করিডোরের কাগজ দেবেন বলে জানিয়ে করিডোর করার শর্তসাপেক্ষে গরু বাজারে পাঠায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় গরু আসার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা প্রাথমিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। এখানে বিজিবি ও কাস্টমস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এ বিষয়ে কাষ্টম সুপার আমিরুল ইসলাম জানান, বিটের কাছাকাছি বসে করিডোরের কাজ করার নিয়ম। কিন্তু আমাদের লোকবল কম। সে কারণে বলা হয়েছে ওখান থেকে একজন লোক আসলে চাহিদা অনুযায়ী ছাড়পত্র দেয়া হবে। সেভাবে নিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে জটিলতা তৈরীর বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *