ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
ভূরুঙ্গামারীতে সাবেক কমিটি ও শিক্ষকদের অন্তদ্বন্দের জের ধরে মাদরাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে ঐ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভোটহাট দাখিল মাদ্রাসায়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো দাবী করে প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসার সভাপতি ও সুপার বরাবর পাল্টা অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষক।
জানাগেছে, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভোটহাট দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান ২০০৪ সালে মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নিয়োগ হবার পর থেকে সুনামের সাথে তিনি দায়িত্ব¡ পালন করে আসা অবস্থায় ২০১৯ সালে মাদ্রাসটি এমপিও ভুক্ত হয়। শিক্ষকদের বিলবেতন চালু হলে মাদ্রাসার সাবেক কমিটির লোকজন বর্তমান কমিটি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর উক্ত শিক্ষক ৬ষ্ঠ,৭ম শ্রেনীর নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই ও ষান্মাসিক পরীক্ষার খাতা স্বাক্ষর করার সময় ৫ম শ্রেণীর ছাত্র শাকিল আহমেদ,আলীরাজ ও মোর্ছালিনের উপস্থিতিতে একই শ্রেণীর ছাত্রী সেখানে প্রবেশ করে। ঐ সময় উক্ত শিক্ষক তার (মেয়েটির)হাত ধরে কুশলাদী জিজ্ঞাস করার পর বাড়িতে চলে যান। এদিকে ১,২ অক্টোবর যথারীতি মাদ্রাসায় পাঠদান করে আসলেও সেদিনের হাত ধরাকে কেন্দ্র করে ১০ অক্টোবর স্থানীয় কতিপয় লোকজনের প্ররোচনায় ঐ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে তার পিতা জয়নাল আবেদীনকে দিয়ে একটি সাজানো ও মিথ্যা অভিযোগ করানো হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও কারন দর্শানোর নোটিশ জারী করেন। উল্লেখ্য, ৮ অক্টোবর ঐ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও বাদী আবেদন করেন ১০ অক্টোবর। অভিযোগ দায়েরের আগেই কিভাবে তাকে বরখাস্ত করা হলো এনিয়ে স্থানীয় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষক আখতারুজ্জামান ঘটনা সাজানো এবং বানোয়াট দাবী করে সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক ন্যায় বিচারের দাবীতে ১৮ অক্টোবর মাদ্রাসার সভাপতি,সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। ঘটনা সরেজমিন তদন্তে গিয়ে উপস্থিত ছাত্র/ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায় উক্ত শিক্ষক একজন ভাল শিক্ষক এবং সকল ছাত্র/ছাত্রীর প্রিয় শিক্ষক হওয়ায় সকলের সাথে পিতৃ সুলভ আচরন করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে এমন কোন ঘটনা নাই বলে শিক্ষার্থীরা জানান। জয়নাল আবেদীনের অভিযোগের স্বাক্ষী নজরুল ইসলাম জানান,ঘটনার কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী ও অভিভাবকের দাবী বহিরাগত একজন ভাল শিক্ষককে অপবাদ দিয়ে চাকুরীচ্যুত করে সেখানে এলাকার লোকজন চাকুরী করার সুযোগ গ্রহনে এমন হীন চক্রান্তে লিপ্ত কুচক্রী মহলের ইশারায় এমনটি ঘটেছে বলে ধারনা করছেন তারা। ইউপি সদস্য আব্দুল হাই জানান,আমাকে ঐ ছাত্রীর পিতা ঘটনাটি জানিয়েছিল, আমি মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম কিন্তু মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি আসার পর আমি আর বিষয়টি নিয়ে কোন উদ্যোগ নেইনি।
অভিযোগকারী ঐ ছাত্রীর পিতা জয়নাল আবেদীনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন,আমার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারবো না।
মাদ্রাসার সুপার নুর আলম বলেন ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে শোকজ এবং ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাদরাসার বর্তমান সভাপতি আলহাজ শাহজাহান সিরাজ জানান, পরে আমরা জানতে পেরেছি ঘটনাটি সাজানো। এব্যাপারে পরবর্তী মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, মাদ্রাসার সুপারকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *