রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরসভার শান্তিপুর ভান্ডারা এলাকায় অবস্থিত নতুন ভবন নির্মাণের স্থানে থাকা
১৪ টি গাছ কাটার জন্য দরপত্র আহ্বান করে পৌর কর্তৃপক্ষ। ওই স্থান থেকে দুটি বড় কাঁঠাল গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গাছ দুটির বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা হবে বলে স্থানীয়রা জানান। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,কয়েকজন গ্রাম পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে শ্রমিক দিয়ে গাছ কাটা তদারকি করেন। সেখানে গাছ কাটার আইনি অনুমোদন সম্পর্কে জানতে চাইলে এক গ্রাম পুলিশ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমানের নির্দেশে গাছ কাটা হচ্ছে। কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় গাছ কাটছে তা তাদের জানা নেই।
এবিষয়ে হোসেনগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি জানান, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের নামে জমির সব কাগজ পত্র আপডেট রয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে কি লেনদেন হয়েছে তার কোন তথ্য আমাদের ইউপি পরিষদে জানা নেই। দরপত্র আহবান করার আগে এ বিষয়টি নিয়ে মেয়র আমার সাথে আলোচনা করতে পারতেন, তা তিনি করেননি। সে কারণে কিছুটা ঝামেলা রয়ে গেছে। যার ফলে আমাদের পরিষদের গাছ কাটা হচ্ছে। তবে ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেটে ফেলা গাছ দুটি জব্দ করেছে। তিনি যা ব্যবস্থা নিবেন তাই হবে। এ বিষয়ে পৌরমেয়র মোস্তাফিজুর রহমান জানান,পৌরসভার নতুন ভবনের জন্য পৌরশহরের মধ্যে থাকা বাশঁবাড়ি মৌজার ২৯০ দাগের হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন কাযার্লয়টির জন্য ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন পৌর কতৃর্পক্ষ। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতিক্রমে পৌরভবন নির্মানের জন্য থাকা নানান প্রজাতির গাছ বিক্রির জন্য দরপত্রের আহবান করা হয়। সেই দরপত্র অনুযায়ী আগামী ২৬ ডিসেম্বর দরপত্রের সিডিউল বিক্রির শেষ দিন ছিলো। মেয়র আরো বলেন, দরপত্রের সময় শেষ না হতেই ২৫ ডিসেম্বর হঠাৎ করে জানতে পারি যে, হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি তার লোকজন দিয়ে গাছ কাটতে শুরু করে। পরে বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করেছি। তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। জানা যায়, হোসেনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ওই পুরোনো ও পরিত্যক্ত কার্যালয়টি বর্তমানে রাণীশংকৈল পৌরসভার ভিতরে রয়েছে। এবং ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ৫০ শতাংশ জমির উপর পৌরসভার ভবন নির্মাণ করার জন্য অনুমোদন নিয়েছেন। প্রক্ষিতে ওই পরিষদ চত্বরে থাকা কাঁঠাল গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কাটার জন্য সব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র আহবান করেন পৌরসভার মেয়র।
এ বিষয়ে এদিন বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রকিবুল হাসান বলেন,আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ইউপি চেয়ারম্যান বিনা অনুমোদনে গাছ কাটতে পারেন না। কেটে ফেলা কাঁঠাল গাছ দুটো জব্দ করা হয়েছে। দরপত্রের সময় উপেক্ষা, বনবিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটার জন্য এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *