নুর-ই-আলম সিদ্দিকী,স্টাফ রিপোর্টার
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কালীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত তিনজন কর্মচারীর পদ শূন্য দেখিয়ে পুন: নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ৪০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে।
প্রধান শিক্ষক তার পাতানো কমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন নিয়োগ বাতিল করে পূন:নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে এ টাকা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি স্থানীয় কালীরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর বকস প্রতিবাদ করায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় রাজারহাট থানায় ডায়েরি করেন হুমকিপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক।
জানা যায়- বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিও ভুক্ত হওয়ার পরবর্তীতে ২০২১ সালে নতুন পদ সৃষ্টি হয়। পদগুলোতে পূর্বের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী এমপিও ভুক্তির সুযোগ থাকলেও প্রধান শিক্ষক তা না করে পাতানো কমিটিতে তার বড় ভাই রুহুল আমিনকে গভর্নিং বডির সভাপতি,নিকট আত্নীয় নুর ইসলাম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং রফিকুল ইসলামকে দাতা সদস্য করে পূর্বের নিয়োগ প্রাপ্তদের মনগড়া অনুপস্থিতি দেখিয়ে চাকুরীচ্যুত করে গত ২৫ জানুয়ারী আয়াসহ ৪টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করার অভিযোগ তোলেন প্রতিষ্ঠাকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত তিন কর্মচারীসহ এলাকাবাসী। এ ঘটনায় চাকুরীচ্যুত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন নৈশ্য প্রহরী নাজিমখান ইউপির সোম নারায়ন গ্রামের বাসিন্দা মৃত: ক্ষিরোদ চন্দ্র বণিকের পুত্র অনিল চন্দ্র বণিক,মৃত আবদুল ছাত্তার সরকারের পুত্র পিয়ন সুরুজ্জামান ও মৃত ছমদ্দি মুন্সির পুত্র ঝাড়ুদার আবদুল মতিন কুড়িগ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর যৌথ অভিযোগ করেন। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে,কালীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত তিন কর্মচারীর কাছে ১৫ লক্ষাধিক টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ডের নিয়ে ২০০০সালে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ।অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন প্রধান শিক্ষক আয়াসহ ৪টি পদে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রে ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের উপস্থিতিতে পুনরায় নিয়োগের প্রতিবাদ জানালে কয়েকজন নতুন প্রার্থীকে দেখতে পায় এবং প্রধান শিক্ষকে জিজ্ঞেস করলে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়টি গোপন করে অন্যত্র চলে যায়। অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন বলেন, এ ব্যাপারে আমিসহ অনেকেই বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ করিলে প্রধান শিক্ষকগং প্রাণনাশসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এবিষয়ে কালীরহাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চেয়ে মুঠোফোন বন্ধ রাখা ও বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রব বলেন পূর্বের নিয়োগের বিষয়ে আমার জানা নেই।বিষয়টি জানার পরে প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোন অফ পাচ্ছি।পরীক্ষার্থী কতজন উপস্থিত ছিলেন জানতে চাইলে তিনি জানান ৪ পদে ১২জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।এবিষয়ে গভর্নিং বডির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, পুর্বের নিয়োগের বিষয় আমি জানিনা হেডমাস্টার জানবেন। নিয়োগ যদি অবৈধ হয় তাহলে পিয়নরা যা খুশি তাই করবে।
কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুল আলম অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন অভিযোগ তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *