রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাও) সংবাদদাতা ঃ
ঠাকুরগাওয়ের রাণীশংকৈলে আলুর চেয়ে পানির দাম বেশি। কৃষক চোখে শুধু হতাশার সুর। সুদের উপর ঋণ নিয়ে লাভের আশায় আলুর চাষ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ক্ষুদ্র চাষীরা। কৃষি কাজে উপর্যপুরি লসের হিসেব গুনতে গুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তবুও লাভের আশায় বুক বেধে আগাম জাতের আলু চাষে অনেক কৃষক ঝুঁকে পড়েছিল। কিন্তু সে স্বপ্নও জলে ভেসে গেল। মাথায় হাত পড়লো কৃষকের। মৌসুমের শুরুতে হাতে গনা কয়েকজন কৃষক ৩০ টাকা দরে আলু বিক্রী করার সুযোগ পায়। কিন্তু সে সময় ফলন ততটা সুবিধা জনক হয়নি। তার পরেই আলুর বাজারে মুল্য ধস পড়তে শুরু করে। ক্রমান্নয়ে আলুর দাম কমতে থাকে। বর্তমানে এক কেজি আলূ বিক্রী হচ্ছে ৪ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি ৪ টাকা দরে বিত্রী করে সেখান থেকে কৃষককে আবার খরচের টাকা বাদ দিয়ে আরো কম টাকা কৃষকের পকেটে আসে। আর পানি যা প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া যায় যার উৎপাদন খরচ নাই। বাজারজাত করার জন্য প্রক্রিয়া জাত করতে যে পরিমান খরচ তাই। অথচ প্রতি ১ লিটার পানি ২০ টাকা ও আধা লিটার পানি ১৫ টাকা দরে বাজারে বিক্রী হচ্ছে। উপজেলার বনগাও গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আলিফ জানান ৩০ বিঘা আলূ চাষ করতে আমার প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এখন তা বিক্রী করলে ২ লক্ষ টাকা পাবনা। হতাশার শুরে তিনি বলেন লাভের আশায় আলূ চাষ করে বড়ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়লাম ভাই। উমরাডাঙ্গী গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে নিয়ামত আলী জানান, ২ বিঘা আলু চাষ করে তাকে প্রায় ৭ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেকে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আলু চাষ করেছে। আবার আলূ চাষের টাকা যোগান দিতে অনেককে নিতে হয়েছে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ কিংবা লাভের উপর টাকা। আলুর বাজারে ধস নামায় লাভের আশায় চাষীদের মাথায় বাজ পড়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৭৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। চাষ করা হয়েছে ৩৮২৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ ভাল হয়েছে কিন্তু দাম না থাকায় কৃষকের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাজেদুল ইসলাম জানান, উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী পরিমান জমিতে আলূ চাষ হয়েছে। কিন্তু বাজারে আলুর দাম না থাকায় কৃষক খরচের টাকা তুলতে হিমশিম খাচ্ছে। কৃষিকাজে এভাবে লোকসান গুনতে থাকলে কৃষক আলু চাষে আগ্রহ হারাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *