শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, স্বাক্ষর জালিয়াতি ও স্কুলফাঁকিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোক্তার হোসেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত এ অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং এলাকার অভিভাবকদের দাবি একই স্কুলে দীর্ঘ ২৭ বছর চাকুরির সুবাদে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের দৌরাত্ব বেড়েছে চরমভাবে, তারা সত্বর বদলীর দাবি জানিয়েছেন।
তথ্য অনুসন্ধান ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১০৬ নং গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে বিগত পেনাল কোডের ৪১৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অভিযোগ ওঠে। ০৫ আগষ্ট’১৮ তারিখে স্কুলের মালামাল ক্রয় বাবদ ১৮ হাজার ৩০ টাকার ব্যয় বিবরণীতে সভাপতির স্বাক্ষর জাল বলে দাবি করে একটি মামলা করেন সভাপতি মোক্তার হোসেন। এছাড়াও ০৯ সেপ্টেম্বর’১৮ তারিখে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা হতে মালামাল ক্রয় করে প্রধান শিক্ষক সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ৪১ হাজার ২শ’ ৫ টাকার ভাউচার তৈরি করে শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীগন জানান, স্কুল সন্নিকটে প্রধান শিক্ষকের বাড়ি হওয়ার কারনে কারন অকারনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে বাসা-বাড়ির বিভিন্ন কাজসহ রসুন, পিয়াজ বাছাই করিয়ে নেন। তাদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র একই স্কুলে ২ যুগের বেশি সময় শিক্ষকতা করার সুবাদে চরম দৌরাত্ব দেখিয়ে থাকে। তিনি নিয়মিত স্কুল করেন না, একাধিক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় সাপ্তাহিক বাজারের দিন দুপুর হতে না হতেই তিনি সহকারিদের নিকট স্কুল রেখে বাজারে চলে যান।
স্কুল সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক স্কুলের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়াই বিভিন্ন ফাইল অফিসে দাখিল করেন। বিধি মোতাবেক সভাপতির অনুপস্থিতে সহ-সভাপতির স্বাক্ষরে ফাইলের কাজ চলার স্পষ্ট বিধান থাকলেও তাও মানেন না প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র জানান, নিয়মিত কমিটি নেই, দীর্ঘদিন নির্বাচন হয়না বলেই তিনি সহকারি শিক্ষা অফিসার দিয়ে বেতন-বিলসহ প্রয়োজনীয় স্বাক্ষরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন জানান, ১০৬ নং গোপালপুর সরকারি প্রার্থীমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় সমস্যার কারনে দীর্ঘদিন কমিটি হয়নি, পুরনো সদস্যরাই রয়ে গেছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নানা অভিযোগ তদন্ত করে উপ-পরিচালকের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। তাকে বদলীর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে যে কোন সময় আদেশ আসতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *