ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ভুরুঙ্গামারীতে লায়ন কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতাল নামের ভুয়া ক্লিনিক ও ড্রাগ লাইসেন্স বিহিন ঔষধের ব্যবসা জমজমাট। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী রোগীদের।
জানাগেছে উপজেলার ভুরুঙ্গামারীর সদর ইউপির দেওয়ানের খামার গ্রামের জনৈক আবুল কালাম আজাদ ও প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামের বাসা ভাড়া নিয়ে দিনাজপুর জেলার সদর থানার নিউ টাউন এলাকার মনিরুজ্জামানের পুত্র স্বঘোষিত লায়ন টি হোসেন তুহিন নিজেকে রাশিয়া থেকে এমবিবিএস একটি নিউ দিল্লী থেকে গ্লুকোমা ও ছানিরোগের উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে নিজেই চিকিৎসক ও পরিচালক সেজে ভুরুঙ্গামারীতে লায়ন কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতাল এবং হাসপাতালেই ড্রাগ লাইসেন্স বিহিন ঔষধের ব্যবসা করে এলাকার হত দরিদ্র মানুষের নিকট চক্ষু পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয় চক্ষু চিকিৎসার নামে ভুল চিকিৎসা দিয়ে অনেকের চোখ নষ্ট করে আসার ঘটনায় গত ২৩ জানুয়ারী উক্ত চক্ষু হাসপাতাল ঘেরাও করে উক্ত তুহিন কে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী গনধোলাই দেওয়ার চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী রোগীর চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহনের আশ্বাসে তাকে ছেড়ে দেয়। এদিকে উক্ত তুহিন তার চক্ষু হাসপাতালেই ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই রোগীদের নিকট বিক্রি করে সরকারকে লক্ষ লক্ষ রাজস্ব ফাকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে । এলাকাবাসীর অনেকে জানায় বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিক পরিচালনার কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই এলাকার ৫০/৬০ জন যুবক ও যুব মহিলাদের প্রত্যেকের নিকট থেকে ২৫ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা নিয়ে চাকুরী দিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করে আসায় গত ২৩ জানুয়ারীর রোগীর স্বজনরা উক্ত পরিচালককে ভুয়া চিকিৎসা দেয়ার জন্য গনধোলাই দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। আরও জানাগেছে উক্ত তুহিন পঞ্চগড়ে এরকম ভুয়া চক্ষু হাসপাতাল খুলে প্রতারনা করে সেখান থেকে গা ঢাকা দিয়েছে । পরিচালক তুহিনকে ২৩ জানুয়ারীতে হাসপাতাল ঘেরাও করে তাকে গণধোলাইয়ের চেষ্টার পর প্রতারনার নতুন ফাঁদ হিসাবে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাইকিং করে ফ্রি চক্ষু পরীক্ষার নাম করে ৩০ টাকা দিয়ে টিকেট বিক্রি এবং চক্ষু দেখে হাসপাতালে আরও পরীক্ষা করতে হবে অজুহাত দেখিয়ে চিকিৎসা দেয়ার নাম করেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও জানাগেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার প্রতারিত রোগীদের অভিযোগ আসলে অনেকের টাকা পয়সা ফেরৎ দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ অফিসার ডাঃ সুভাষ চন্দ্র জানান,উদ্বোধন করার সময় তারা কোন প্রকার বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে না পারায় আমরা তাদের কার্যক্রম চালাতে নিষেধ করি। তারা নিষেধ অমান্য করে কার্যক্রম চালাচ্ছে জানতে পেরে কুড়িগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানানো হয়েছে। ভুরুঙ্গামারী ড্রাগ সমিতির নেতা মেডিসিন কর্নারের সত্বাধিকারী মুকুল জানান,ড্রাগ লাইসেন্স বিহিন কোন হাসপাতাল ক্লিনিক হতে রোগীদের নিকট ঔষধ বিক্রয় নিষিদ্ধ হলেও উক্ত লায়ন কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে ফার্মেসী দিয়ে রোগীদের নিকট ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে যা সরকারী আইনে নিষিদ্ধ। বিষয়টি ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ও রংপুর বিভাগীয় ড্রাগ সুপারকে জানানো হয়েছে। অনতি বিলম্বে উক্ত চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয়দানকারী পরিচালক তুহিনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে হাজার হাজার চক্ষু রোগী প্রতারনার শিকার সহ অকালে চক্ষু হারাবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে।