ফারহানা আক্তার,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের যমুনা নদীর তীরে বেল-আমলা গ্রামে অবস্থিত বার শিবালয় মন্দিরে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশীতে দুই দিন ব্যাপী শিবরাত্রি পূজা অনুষ্ঠিত জমে উঠেছে
পূজাকে কেন্দ্র করে এখানে বাহারি পণ্যের মেলাও বসেছে। সারাদেশ থেকে সনাতন ধর্মালম্বীরা এখানকার ছোট যমুনা নদীতে পূন্যস্নান করতে আসেন। পূন্যস্নান শেষে পূন্যার্থীরা শিবের মাথায় দুধ ও পানি ঢেলে পারিবারিক শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন।
মেলায় মানত, শিবদর্শন, গীতা পাঠ, উলুধ্বণি আর ঐতিহ্যবাহী ঢাক ঢোলের বাজনায় সারা এলাকা মুখরিত হয়। এছাড়া মেলায় দেশের সুখ-সমৃদ্ধি ও মানব কল্যাণে শিবঠাকুর কে সন্তুষ্ঠ করতে আলো আধারির মাঝে কীর্তন গানের অনুষ্ঠান করা হয়। মেলায় শাখা-সিদূর, পৈতা, তিলক, পুতির মালা, কাঠের জালি, পুতুল, খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিসপত্রসহ, বিভিন্ন প্রকার আসবাব-পত্র বেচা কেনাও জমে উঠেছে।
বার শিবালয় বা দ্বাদশ শিব মন্দির জয়পুরহাট জেলা থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে একটি অনন্য প্রাচিন মন্দির যা যমুনার তীরে বেল-আমলা গ্রামে অবিস্থত। প্রাচীন এই মন্দিরের নির্মাণকালের ইতিহাস জানা না গেলেও এর গঠন প্রণালী এবং নির্মাণের ধরণ দেখে ধারণা করা হয় এটি সেন যুগে নির্মিত। সেন রাজা বল্লাল সেন ছিলেন শিবের উপাসক তথা শৈব। হতে পারে তিনিই বার শিবালয়ের নির্মাতা। একে একটি মন্দির না বলে বারটি মন্দির বলাই শ্রেয়। বার শিবালয় মানে ১২ শিবের আলয়। মন্দিরের বারটি শৃঙ্গ দেখলে যেকোনো ভক্তের মন ভরে ওঠে শ্রদ্ধায়। শুধু স্থাপত্য নিদর্শন দেখা নয়, মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর সৌন্দর্য এই স্থাপত্য নিদর্শনকে দিয়েছে বিশেষ বৈচিত্রতা। পাশাপাশি প্রকৃতির শান্ত ছোঁয়াও রয়েছে এখানে যা মনকে প্রশান্তি দেবে।
আসা ভক্তবৃন্দ ও পূজারী।
১২ টি শিব মন্দিরের প্রতিটির অভ্যন্তরে আছে গণেশের চিত্র, নম শিবায় ও শ্রী গণেশায় দেবায় নম, বিভিন্ন দেব-দেবীর কাহিনী চিত্র এবং রামলক্ষণ-সীতা, হনুমান ও মা কালীর প্রতিমা। আর মন্দির আঙ্গিনার মাঝখানে স্থান পেয়েছে একটি নন্দী মূর্তি। তবে বার শিবালয় মন্দিরের ১২টি শৃঙ্গ বা আলয় দেখে আগত ভক্তরা সবচেয়ে বেশি পুলকিত হয় এবং এ মেলায় শুধু ধর্মানুরাগীরাই নয়, অনেক ভ্রমণপিপাসুরাও এখানকার প্রকৃতির শান্ত ছোঁয়া নিতে যোগ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *