তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম।।

ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী ধর্ম ক্লাসে নৈতিক শিক্ষা নিতে গিয়ে লম্পট শিক্ষকের অনৈতিক লালসার শিকার হওয়ায় স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিতে বাধ্য হয়েছে। গতকাল (২৬ অক্টোবর) বুধবার ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের লোকজন বিদ্যালয়টিতে স্থানীয় একজন কাউন্সিলরের সহযোগিতায় ছাড়পত্র নিতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সদরের আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয় ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌর এলাকার পূর্বশিব বাড়ি খালি ভিটা গ্রামের জনৈক দরিদ্র এক হিন্দু পরিবারের শিশু কন্যা উল্লেখিত বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন ২৭ সেপ্টেম্বর ওই বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান পদে কর্মরত মৃণাল কান্তি রায় আনুমানিক দুপুর আড়াইটার দিকে ওই বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মাত্র দু’জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে হিন্দু ধর্ম ক্লাস করাচ্ছিলেন। এ সময় বিশেষ কারণে একজন শিক্ষার্থী হঠাৎ করে অন্য একটি রুমে গেলে লাইব্রেরিয়ান মৃণাল কান্তি সুযোগ বুঝে সেখানে থাকা জনৈক শিক্ষার্থীর উপর জোরপূর্বক শ্লীলতাহানীর অনৈতিক তৎপরতায় লিপ্ত হন। এসময় ধস্তাধস্তির পর্যায়ে শিক্ষার্থী ব্রেঞ্চে পড়ে যায়। এরপর কোমলমতি ওই শিক্ষার্থী বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকাকে অবহিত করেন। শিক্ষার্থীর ভাষ্যমতে এসময় ওই শিক্ষিকা তাকে বিষয়টি অন্য কাউকে জানাতে নিষেধ করেন এবং ঘটনাটি তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষককে অবহিত করেন।
একদিন পরই পূজার ছুটি শুরু হওয়ায় বিষয়টিতে প্রধান শিক্ষক আর কোনো গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে । পূজার ছুটি শেষে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে বেশ কয়েক দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত দেখে গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষক ২ জন নারী ও ১ জন পুরুষ সহকারী শিক্ষককে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে পাঠান।
কোমলমতি ওই শিশু শিক্ষার্থী উপস্থিত শিক্ষকদের মাঝে ধর্ম ক্লাসের সময় তার উপর চালানো লাইবেরিয়ান মৃণাল কান্তি রায়ের অনৈতিক কর্মকান্ডের কথা বর্ণনা করে আগামীতে ওই বিদ্যালয়ে পড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তখনই ঘটনাটি ওই শিক্ষার্থীর দাদু এবং কাকা জানতে পারে এবং তাদের মাথায় যেন বজ্রপাত হয়। শিক্ষার্থীর মা ও বাবা দরিদ্র হওয়ায় ঢাকায় বেক্সিমকো কোাম্পানির একটি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন।
বিষয়টি জানার পর শিক্ষার্থীর কাকা অমৃত রায় নিজে বিদ্যালয়ে এসে গত ২০ অক্টোবর ঘটনার প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও প্রধান শিক্ষক স্পর্শ কাতর বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীর পরিবার বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এরপরই তার পরিবারের লোকজন স্থানীয় কাউন্সিলর খোরশেদ আলম লিটন এর শরণাপন্ন হন এবং তার সহযোগিতায় বিদ্যালয় থেকে বুধবার ওই শিক্ষার্থীর ছাড়পত্র নেন বলে জানান শিক্ষার্থীর কাকা অমৃত রায়।এদিকে মেয়েদের স্কুলে এমন চরিত্র হীন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ দেয়ায় শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কবির রানুর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান। বিদ্যালয়টির অস্থায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নূরে- আলম সিদ্দিকীর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন,ছোট ঘটনা বিষয়টি শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করে কি করা যায় দেখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *