মোঃ হাসান আলী ( সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠে মাঠে বিভিন্ন জাতের সরিষা ফুলের হাসি ঝরছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হবার অপার সম্ভাবনা দেখছেন সরিষা চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার প্রদান করায় এ বছর বেড়েছে সরিষার আবাদ। চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কম খরচে অধিক লাভ, তাই সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। সরিষা বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উল্লাপাড়া উপজেলার মোট ২৩ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হচ্ছে। গত বছর এ উপজেলাতে ২০ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিলো। গতবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে ফলন ভালো ও অধিক লাভবান হওয়ায় এ বছরে গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা চাষ করছেন চাষীরা।

উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মাঠের দিকে তাকালে মনে হয় ফসলের মাঠ যেন সেজেছে গায়ে হলুদের সাজে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের হলুদ রাজার দেশে মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত ফসলের মাঠ। সরিষার ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।সরিষা চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হওয়া যায়। জমিতে সরিষা রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৫-৬ মণ। সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে ইরি বোরো চাষে খরচ করা যায় পাশাপাশি তাদের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটানোও সম্ভব।

উপজেলা কৃষি অফিসার সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্যার কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলতি বছরে উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কৃষি প্রণোদনা আওতায় আমরা ১২ হাজার ৯৯০ জন কৃষকে বিনামূল্যে বারী ১৪, ১৭, ১৮ ও বীনা ৯ ইত্যাদি জাতের সরিষা বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী, মাঠ দিবস,উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের আধুনিক জাতের সরিষা চাষাবাদ সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন,স্বল্প মেয়াদি জাতের রোপা আমনের চাষাবাদ করার ফলে যে সকল জমি পতিত রাখা হতো সেগুলোতে জমিতে সরিষা আবাদ করা হচ্ছে । সরিষা বপন থেকে কর্তন পর্যন্ত কৃষকদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান অব্যহত রেখেছেন মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *