কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলায় আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল নামে ভুয়া দুইজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের তালতলা রোডের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃঞ্চপুর কামারপাড়া ও মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর ফারাজিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃঞ্চপুর কামারপাড়ার মৃত করিমুল্লা (জোগলা)’র শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল এক সময় কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌর বাজারে খুচরা মসলার ব্যবসা করতেন আর মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃঞ্চপুর ফারাজিপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের পুত্র আলমগীর হোসেন জেলা শহরের জর্জ কোর্ট মোড়ে ফটোকপির ব্যবসা করতেন।
পুলিশ অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারী সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাধের নির্মান কাজ চলাকালীন সময় ওই দুইজন সাংবাদিক পরিচয়ে উপস্থিত হয়। সেখানে এসকে এমদাদুল হক আল মামুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার জাহিদুল ইসলামের নিকট এক লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আটককৃতরা সাব ঠিকাদার জাহিদুল ইসলামের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে তার কাছে থাকা লেবার হাজিরার ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৩০ জানুয়ারী আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলামকে আসামী করে সদর থানায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ভুয়া দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে সকালে তাদের জেল হাজতে প্রেরন করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার ২নং আসামী শহিদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌর বাজারে খোলা দোকানে মসলা বিক্রি করতেন। শহিদুল ইসলামের লেখাপড়া না থাকলেও পরে হঠাৎ করেই তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা আদায় করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে।
মামলার ১ নং আসামী আলমগীর হোসেন আগে জর্জকোটের বাইরে রাস্তার পাশে কম্পিউটারে প্রিন্ট ও ফটোকপির ব্যবসা করতো। পরে সেও সাংবাদিক পরিচয়ে শহিদুল ইসলামের সাথে একই কায়দায় বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাদা আদায় করে আসছিল।
এ ব্যাপারে মামলারবাদী জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২২ জানুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় আসে এবং সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়। সে সময় কাজ বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে তারা দুজনে আমার নিকট এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং টাকা দেয়ার পর কাজ করতে বলে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম অতর্কিত আমার উপর হামলা করে আমার কাছে থাকা শ্রমিকদের মজুরীর ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় কাজে নিয়োজিত থাকা শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা আমাকে জীবন নাশের হুমকী দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *