কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে বোরো ব্রী ধান-২৮ কাটা-মাড়াই। ফলন ভালো হলেও জমিতে পোকা আক্রমণ ও উৎপাদিত খরচ বেশি হওয়ায় খুশি হতে পারছেন না কৃষক। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে চড়া মজুরি দিয়ে ধান কাটা-মাড়াই করছে। কৃষকের স্বপ্ন এখন ধান ঘরে তোলার পালা। দুশ্চিন্তা কালবৈশাখি ঝড় নিয়ে। মাঠ থেকে ভালোভাবে ধান বাড়িতে নিতে পারবে কি না। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, গত বছরের তুলনায় অর্জিত এলাকা বৃদ্ধি, ভালো ফলন হয়েছে। বন্যার সতর্ক বার্তা আছে আমাদের কাছে। এ বিষয়ে আগেই আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। ৮০শতাংশ ধান পাকলেই কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কৃষি প্রধান দেশের কৃষির উপর নির্ভরশীল কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার কৃষক বিভিন্ন দূর্যোগ মোকাবেলা করে উৎপাদিত ফসল চাষ করে এখন তারা বিপাকে। এক বিঘা জমির বোরো বীজতলা থেকে সেচ, সার, কিটনাশক ও কৃষি শ্রমিকের মূল্য দিয়ে ১০হাজার টাকা ব্যয় করে ব্রী ধান-২৮ প্রতি বিঘায় উৎপাদন হচ্ছে ১৪থেকে ১৫মন। উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করে আসল টুকুই তুলতে পারছেন না কৃষকরা। অতিরিক্ত অর্থ দিয়েও কাটা ও মাড়াইয়ের অভিযোগ চাষির। ব্রী ধান-২৮ ইতিমধ্যে কাটা-মাড়াই হলেও উফসী ও হাইব্রীড ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে এখনও সময় লাগবে ১৫দিন। প্রতি একর জমিতে গড়ে ৫০মণ ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা কৃষকের।

কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় ১লাখ ১৬হাজার ১২০হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১৮হাজার ৩৩২হেক্টর জমির ব্রী ধান-২৮ ইতিমধ্যেই ৪০শতাংশ কাটা-মাড়াই হয়েছে এবং ৯৭হাজার ৭৮৮হেক্টর জমির উফসী ও হাইব্রীড ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে এখনও বাকি ১৫দিন। প্রতি একর জমিতে ৬১মণ ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে।

কৃষক আবুল কাশেম ও মকবুল হোসেনসহ অনেক কৃষক বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি আমরা। অধিক মজুরি দিয়ে পাকা ধান কাটা-মাড়াই করতে হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় সংসার খরচ ও ধার-দেনা মিটাতে কাটার পরই জমির পাশেই কম দামে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেকে।

ধান মাড়াই মেশিন মালিক ময়নাল হক বলেন, গত বছরে ৭শত টাকায় এক বিঘা জমির ধান মাড়াই করেছি। এবারে ডিজেলের দাম বাড়ায় বিঘা প্রতি ৮শত থেকে ৯শত টাকায় বিঘা প্রতি জমির ধান মাড়াই করছি।

ধান কাটা শ্রমিকরা জানান, প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে ৩হাজার টাকা নিচ্ছি। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিছু জমির ধানে পোকা আক্রমণ করেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ব্রী ধান-২৮ কাটা-মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। গত বছরের তুলনায় অর্জিত এলাকা বৃদ্ধি, ভালো ফলন ও পোকার আক্রমণ নেই। বন্যার সতর্ক বার্তা আছে আমাদের কাছে। এই বিষয়ে আগেই আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। ৮০শতাংশ পাকলেই কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *