এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
অবৈধ প্রক্রিয়ায় স্বামীকে স্কুলের সভাপতি বানানোসহ দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোছাঃ নুরবানুর বিরুদ্ধে কমিটি গঠনে অনিয়ম, স্কুল পরিচালনায় স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থ আত্মসাৎ, এবং সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, রামনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোছাঃ নুরবানু ২০১৭ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকেই এডহক কমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে। তবে এই বছরের এপ্রিল মাসে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এবং অভিভাবক, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের নোটিশ বা অবগত না করেই গোপনে প্রধান শিক্ষক তাঁর স্বামী আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করে। পরে সেই কমিটি শিক্ষাবোর্ডে অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে গিয়ে তাদের গঠন প্রক্রিয়ার অনিয়ম ধরা পড়ে।

এর সত্যতা নিশ্চিতে সম্প্রতি শিক্ষা বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের তদন্ত শুরু হলে সম্প্রতি বিষয়গুলো জানাজানি হয়। এমনকি কমিটি গঠনের কাগজপত্রে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের স্বাক্ষর জালিয়াতিরও ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম এখন ব্যাহত হচ্ছে।

সহকারী শিক্ষক মোস্তফিজুর রহমান বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সকল কার্যক্রম প্রধান শিক্ষক গোপনে করেছে৷ শিক্ষক প্রতিনিধিরা নিজেও জানেনা যে তারা কমিটিতে আছে। এমনকি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তাঁকে সহকারী শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ ও ঋণ গ্রহন করতে উৎকোচ প্রদান করতে হয়।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষিকা নামে মাত্র প্রধান রয়েছেন। তাঁর দাপ্তরিক সকল কাজ তো তার স্বামী পরিচালনা করে। এছাড়াও তিনি নিয়মিত স্কুলে না থাকায় ক্লাশ ও লেখাপড়ার মান বিঘ্ন হচ্ছে। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক তার স্বামীকে সভাপতি বানিয়ে ভুয়া কমিটি তৈরি করে সেই কমিটি পাশ করার জন্য তিনি নিজেই তাঁর এক ঘনিষ্ঠ অভিভাবক সদস্যকে দিয়ে আদালতে মামলা করায়।

এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরবানু বেগমকে স্কুলে না পেয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দিলে তার স্বামী আনোয়ার হোসেন জানান, জরুরি কাজে দিনাজপুরে যাচ্ছি। আর অফিস সহকারী অদক্ষ হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে নিয়ে আমাকেই বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ঐ বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের জন্য তফসিল ঘোষণা ছাড়া আর পরবর্তীতে আর কোন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জাল করে গোপনে কমিটি গঠনের পর শিক্ষা বোর্ডে অনুমোদনের জন্য পাঠালে তদন্তে তাঁর অনিয়ম প্রকাশ হয়। বর্তমানে বিষয়টি আদালত বিচারাধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *