খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
বাজারের চেয়ে সরকারী মূল্য কম হওয়ায় দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলায় চলতি মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানের সময়সীমা আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এক গ্রাম ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। তবে চাল সংগ্রহ শুরু হলেও সেটি থমকে গেছে।

উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে খানসামা উপজেলায় ২৭ টাকা কেজি দরে ৭৬৮ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কিন্তু ০৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত
শূন্যের ঘরে ধান সংগ্রহ। অন্যদিকে ৪২ টাকা কেজি দরে এই উপজেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আছে ৭৩২ টন। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে ২০০ টন। এছাড়া খানসামা উপজেলায় মোট মিলারের সংখ্যা ৯২ জন হলেও এবছর চাল প্রদানের জন্য খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তি করেছে ৭০ জন মিলার।

জানা যায়, সারা দেশে একযোগে আমন মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। এর আগে অনলাইনে আবেদন করা কৃষকদের মধ্যে লটারী করে ধান সংগ্রহের জন্য কৃষক বাছাই করা হয়। তবে বাজারের চেয়ে সরকারী মূল্যের ধান দাম কম হওয়ায় অনলাইন আবেদনে তেমন আগ্রহ ছিল না কৃষকদের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসুদেব রায় জানান, আমন মৌসুমে উপজেলার ২ হাজার ৯শ’৪০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই মৌসুমে ৪১ হাজার ৮১০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

উপজেলার পাকেরহাট গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, খুচরা বাজারে ধান বিক্রি করতেছি ৩০ টাকা কেজি দরে অন্যদিকে সরকারী খাদ্য গুদামে ২৭ টাকা কেজি দরে ধান নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় শুকানো ও পরিষ্কার করে বিক্রি করতে গিয়ে সরকারী মূল্যের চেয়ে বেশী খরচ হয়। এর চেয়ে ভোগান্তি ছাড়াই ধান হাটে-বাজারে বিক্রি করলে লাভ বেশী।

উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সদস্য আসাদুজ্জামান শাহ বলেন,ধানের বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতিকেজি চাল উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ৪৬ টাকা। আর সরকার চালের মূল্য নির্ধারণ করেছে ৪২ টাকা। লোকসান হওয়ায় খাদ্য গুদামে চাল প্রদানে মিলারদের অনীহা রয়েছে। তবে সরকারী সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকায় চাল প্রদানের ইচ্ছা থাকলেও ধানের দাম বৃদ্ধিতে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না এখন।

খানসামা এলএসডি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আখতার বলেন, ধানের সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় এখন পর্যন্ত আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহ করতে পারিনি। তবে সরকারের যে মূল উদ্দেশ্য কৃষকরা যেন ন্যায্যমূল্য পায় সেটি বর্তমান বাজার অনুযায়ী পূরণ হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা ধান-চাল সংগ্রহ কমিটির সভাপতি রাশিদা আক্তার বলেন, ধান বিক্রিতে কৃষকদের আগ্রহী করতে খাদ্য দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে ধান ও চালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে উর্দ্ধতনদের অবহিত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *