ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
ঝালকাঠিতে সুগন্ধা-বিষখালী নদীর আকস্মিক ভাঙনে পশ্চিম দেউরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারের একাংশ ও একটি পাকা মসজিদসহ তীরবর্তী এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। এ সময় স্থানীয় কৃষক আঃ বারেকের পুত্র নেয়ামত উল্লাহ (১৬) ভবনের নীচে চাপা পড়ে নিখোঁজ ও মেহেদী হাসান সহ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাগেছে।

পশ্চিম দেউরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক খান জানায়, সকাল ১০ টার দিকে সাইক্লোন সেল্টার কাম বিদ্যালয় ভবনের পশ্চিম অংশের মাটি কিছুটা দেবে গেলে আমরা শিক্ষকরা কয়েকজন ছাত্র নিয়ে স্কুলের মালমাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে থাকি। দুপুর সাড়ে ১২ টায় হঠাৎ বিকট শব্দে ভবনের অর্ধেকের বেশী অংশ ভেঙে নদীর পানিতে তলিয়ে যায়।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী খাইরুল জানায়, পাকা ভবনটি যখন দেবে যাচ্ছিল তখন আমার আত্মীয় নেয়ামতুল্লাহ মোবাইল দিয়ে দৃশ্যটি ভিডিও করছিলো। হঠাৎ করে বিকট শব্দে ভবনের বড় অংশ ভেঙ্গে পরলে আমিসহ কয়েকজন দৌড়ে সরে আসতে পাড়লেও নেয়ামত বিল্ডিংয়ের নীচে চাপা পরে পানীর নীচে চলে যায়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিসার আবুল হোসেন বলেন, আমরা একটি ইউনিট নিয়ে ঘটনা স্থলে এসে দেখি সাইক্লোন সেল্টারের পশ্চিম অংশ সম্পূর্ন পানীর নিচে তলিয়ে গেছে। যা আমাদের পক্ষে উদ্ধার করা সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে বরিশাল নৌ ফায়ার স্টেশনকে অবগত করেছি। তারা নিখোঁজ নেয়ামতকে উদ্ধারের জন্য ডুবুরী নিয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে।

ইতিপূর্বে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও ফণীর প্রভাবে বৃদ্ধি পাওয়া পানির তোড়ে এই সাইক্লোন সেল্টারের একটি পানির ট্যাঙ্কি ও গভীর নলকূপ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এমন কি ভবনটির বেজমেন্টের নিচ দিয়ে মাটি সরে গিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এনিয়ে অনেক আলোচনা সত্বেও সংস্কারের উদ্দোগ না নেয়ায় আজ অর্ধেকটা সুগন্ধা-বিষখালীর মোহনায় ডুবে গেছে এবং বাকী অংশ যে কোন মুহূর্তে নদীতে চলে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ইমারজেন্সি সাইক্লোন রিকভারি এন্ড রিস্টোরেশন প্রজেক্টের আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম দেউরী গ্রামে বিষখালী নদীর তীরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করে। এ সময় সুগন্ধা-বিষখালী নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ১০০ গজের মধ্যে এ ধরনের ভবন নির্মাণে স্থানীয়রা জোড় আপত্তি জানায়।এনিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হলে তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী শাসনের ব্যবস্থা করবে’ বলে দাবী করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বর্তমানে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটির অধেকের বেশী নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছেস বাকী অংশ যেকোন সময় নদীগর্ভে বিলীনের অপেক্ষায় রয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো :জোহর আলী ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *