এস,এন আকাশ,এশিয়ান বাংলা নিউজ ঢাকা
চলতি বছরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসেবে আর নির্বাচনের বাকি ১০ মাস। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে প্রশাসনের প্রস্তুতি। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ১৯ জেলায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নতুন ডিসি। পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২৯ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে শুরু হচ্ছে জেলা সম্মেলন। এই প্রথমবারের মতো জেলা সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুই দিনবাপী এই সম্মেলন সফল করতে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছে ইসি সচিবালয়।
এ সম্মেলনে আগামী নির্বাচন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হযে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মাঠ প্রশাসনের বড় কর্তাদের রদবদল সম্পর্কে জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, কেন তাদের বদলি করা হয়েছে তা না জেনে কিছু বলা যাবে না। তারা দলীয় লোক কিনা তাও আমি জানি না। তবে তারা দলীয় লোক হলে অবশ্যই আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। কারণ এটা মাঠ প্রশাসনের ভাইটাল পোস্ট। নির্বাচনের সময় সাধারণত ডিসিরা রিটার্নিং অফিসার হবে। তারা পুলিশসহ প্রশাসনের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কন্ট্রোল করবে। তিনি বলেন, তত্ত্ববধায়ক সরকারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় দেখেছেন ফিট লিস্টে তালিকায় এক নম্বরে থাকা কর্মকর্তাকেও ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
জানা গেছে, নবনিযুক্ত ডিসিদের প্রায় সবাই ২০তম ব্যাচের। ছাত্রজীবনে এদের অনেকেই ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। জেলা প্রশাসক পদে আরও নতুন নিয়োগ বা রদবদল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অবশ্যই সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তারা প্রাধান্য পাবেন। বিশেষ করে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির সভাপতির একান্ত সচিব নিয়োগ পেতে পারেন।
তালিকায় থাকবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারাও। পুলিশ প্রশাসনেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এরসঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে ফিট লিস্ট তৈরি করা হয়। তারপর নিয়োগ দেওয়া হয়। পরীক্ষাও নেওয়া হয়। অবশ্যই যোগ্যদেরই ফিট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এখানে স্বজনপ্রীতি বা অন্যাকোনো কিছুর সুযোগ নেই। তবে আরেক কর্মকর্তা বলেন, সব সরকারের সময়ই নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসান। এটা আবার নতুন কী? এদিকে, আগামী এপ্রিলের মধ্যভাগের পর শুরু হয়ে যাবে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আয়োজন। পাশাপাশি শুরু হয়ে যাবে জাতীয় সংসদ ও পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের মালামাল কেনার প্রস্তুতি। এর আগেই সম্মেলনটি শেষ করতে চলছে জোরপ্রস্তুতি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জেলা সম্মেলন আয়োজন সংক্রান্ত সভা করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে সচিবালয়। চিঠিতে আগামী ১১ মার্চের মধ্যে তাদের অধীনস্থতের নির্বাচনসহ সব পর্যায়ের সমস্যা ও সমাধান সমন্বিত করে লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে নিদের্শনা দিয়েছে। তাদের পাঠানো মতামত নিয়ে মার্চের শেষ সপ্তাহে পরবর্তী বৈঠক করবে কমিশন। মাঠ কর্মকর্তাদের নির্বাচন বিষয়ে আলোচিত ও স্পর্শকাতর মতামতগুলো এজেন্ডাভুক্ত করা হবে এবং সম্মেলনে ওই বিষয়ে পরামর্শ ও দিক-নিদের্শনা দেবে কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এ সম্মেলনে ৬৪ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা আমন্ত্রিত হবেন। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাজেটের আকারের কথাও বলা হয়েছে।
অর্থাৎ এই নির্বাচনের বাজেটের আকার বাড়ছে। প্রতি পাঁচবছরে এই বৃদ্ধির হার একশ কোটি টাকা করে। গত নির্বাচনে পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ছয়শ কোটি টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয়ের খাত ধরা হয়েছে ২৯টি। তবে নির্বাচন পরিচালনা খাতের খতিয়ান বড় হলেও সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় আইনশৃঙ্খলা খাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *