ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের কৃত্তিম প্রজনন ও ভ্রণ স্হানান্তর প্রকল্পের (এআইইটি) মাঠ কর্মীর ভূল চিকিৎসায় একটি গাভীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত গাভীটির মালিক উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারিঝাড় গ্রামের মৃত আজিমুদ্দিন শেখের পূত্র ময়েন উদ্দিনের।
ওই দুই চিকিৎসক হলেন আমিনুল ইসলাম তার বাড়ি উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের সড়ককাটা গ্রামে।অপরজন পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার। গাভীটির আনুমানিক মূল‍্য ৩ (তিন) লক্ষ টাকা। বিষয়টির ক্ষতিপূরন দাবী করে খামারী ময়েন উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ (ইউএনও) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, গত ২০২২ সালে উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারীঝাড় গ্রামের খামারী ময়েন উদ্দিন প্রানী সম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সদস‍্যভূক্ত হয়ে গাভী পালন শুরু করে। তার সদস‍্য আইডি নং ৭৪৯০৬-উএ-০১-১৯। বর্তমানে তার খামারে তিনটি গাভী ও তিনটি বাছুরসহ ৬ টি গরু আছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে খামারের একটি গাভী বকনা বাছুর প্রসব করে। পরে খামারী গাভী ও বাছুরের পরিচর্যা শেষে তারা ঘুমিয়ে পরে।পরের দিন সকাল ৬ টার দিকে ঘুম থেকে জেগে খামারে গিয়ে দেখে ওই গাভীটির জরায়ু বাইরে বেরিয়েছে। এই অবস্হা দেখে খামারি ময়েন উদ্দিন প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্তিম প্রজনন ও ভ্রন স্নানান্তর শীর্ষক প্রকল্পের মাঠকর্মী আমিনুল ইসলাম ও পশু চিকিৎসক আব্দুস সাত্তারকে খবর দেন। খবর পেয়ে ওই দুই চিকিৎসক খামারে গিয়ে গাভীটির জরায়ু ভিতরে প্রবেশকালে ২০ সিসি এনথেসিয়া ইনজেকশন গাভীর লেজে প্রয়োগ করেন। ইনজেকশন প্রয়োগের পাঁচ মিনিটের মধ‍্যে গাভীটি মৃত্যু বরন করলে ওই দুই চিকিৎসক দ্রুত ঘটনাস্হল থেকে পালিয়ে যান।পরে গাভীটির মালিক স্হানীয় গন‍্যমান‍্য ব‍্যাক্তিবর্গকে বিষয়টি জানালে কোন সুবিচার না পেয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে ক্ষতিপূরণ দাবী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
ভূক্তভোগী খামারী ময়েন উদ্দিন বলেন,গাভীটি মৃত্যুর ফলে আমার তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।ওই গাভী প্রতিদিন ২৫ লিটার করে দুধ দিত। ভূমিষ্ট মায়ের মৃত্যুর কারনে বাছুরটি বাঁচানোই এখন কষ্টকর হয়ে পরেছে।আমি এর বিচার চাই।
ওই দুই চিকিৎসক আমিনুল ও আব্দুর সাত্তার বলেন আমাদের এটা ভূল হয়েছে। আমরা দুজনেই ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রানীসম্পদ কার্যালয়ে উপস্হিত হয়ে ভবিষ্যতে গরু ছাগলের কোন প্রকার চিকিৎসা করবনা বলে মুচলেকা দেই।
উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা:শামীমা আক্তার ঘটনার সত‍্যতা স্বীকার করে বলেন,গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত ওই দুই ব‍্যাক্তিকে আমার কার্য‍্যালয়ে ডেকে এনে মুচলেকা নিয়েছি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব‍্যাবস্হা নিতে জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট প্রতিবেদন প্রেরন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস অভিযোগ প্রাপ্তির সত‍্যতা স্বীকার করে বলেন এবিষয়ে উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব‍্যবস্হা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *