স্টাফ রিপোর্টারঃ
মাদাইখাল কালি মন্দিরে ২২৬ তম কালিপুজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে মন্দিরের স্মৃতিফলক ও এলাকাবাসীসুত্রে জানাগেছে মাদাইখাল কালি মন্দিরটি বাংলা ১২০০ সালে নির্মিত। জনশ্রুতি রয়েছে মন্দিরটির পাশেই মাদাই নামক একটি খালের কারনে মাদাইখাল কালি মন্দিরটির নাম করণ করা হয় মাদাইখাল কালি মন্দির। ২২৬ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল বাংলা ৩০ চৈত্র-১৪২৫ বাংলা তারিখে মাদাইখাল কালি পুজার মেলা শুরু হয়েছে। প্রতি বছর ৮দিন ব্যাপী এ মেলায় সারাদেশ থেকে মহামায়া কালির ভক্ত,সাধু সন্ন্যাসীদের পাশাপাশি সমাগম ঘটে সকল ধর্ম-বর্ণ শ্রেণী পেশার প্রায় লক্ষাধিক মানুষের। আগের তুলনায় মেলার পরিসর কমে আসলেও উৎসাহ উদ্দীপনায় কোন ভাটা পড়েনি। বাংলা ১২০০ সালে স্থানীয় বাসিন্দা রশরাজ সরকার,সন্তোষ কুমার সরকারের পুর্বপুরুসরা দেবীর স্বপ্নাদেষ্ট হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের মাদাইখাল বিলের তীরে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করে পুজার্চনা শুরু করেন। তখন মন্দিরটিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পুজার্চনা চলতো। প্রতি বছর এভাবে পুজার্চনা চলে আসায় পুজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন শুরু হয়। মন্দির প্রতিষ্ঠার কিছু দিনের মধ্যেই দেবীর মহিমা ছড়িয়ে পড়ে অবিভক্ত ভারত বর্ষে। আর মনস্কামনা পুরণে দেবিকে তুষ্ট করতে ভক্তরা মহিষ,পাঠা ছাগল বলিদান,কবুতর উৎসর্গ ও স্বর্ণের তৈরি উপহার সামগ্রী নিবেদন করত। বৃটিশ শাসনামল শেষে কালি মন্দিরটি স্থায়ী করতে ১৯১৩ সালে রশরাজ সরকার,সন্তোষ সরকার ও নন্দকুমার শীল ৩৫ শতক জমি মন্দিরের নামে দান করেন। তখন থেকে মন্দিরটি সুষ্ঠভাবে পরিচালনার জন্য মন্দির কমিটি গঠন করে পুরোহিত নিয়োজিত করে চলে আসছে পুজার্চনা। প্রতি বছর এই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। মাদাইখাল কালি মন্দিরে অধিষ্ঠা কালির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ হাত লম্বা। সারা বাংলাদেশে এই কালির মেলা সুপরিচিতি অর্জন করেছে। প্রতিবছর পুজা উপলক্ষে মেলার সময় সরকারী প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তায় পুজার্চনা চলায় লোকজনের সমাগম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল বাংলা ৭ বৈশাখ শনিবার বলিদানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২২৬তম মেলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *