রাজীবপুর(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি

অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজীবপুর সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা।

শনিবার বেলা ১১ টার দিকে স্কুলের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।পরে একটি মিছিল বের হয়ে উপজেলা শহর ও উপজেলা পরিষদ ঘুরে এসে বিদ্যালয় মাঠে আবারও বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা।এসময় শ্রেণী কক্ষের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করা হয়।তবে কারা জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায় নি।

উতপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্ত্তী ও থানা পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক ভাবে স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করে। এসময় শিক্ষক ও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করে সমস্যা নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানায় ইউএনও।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে বহিরাগতরা স্কুলে হামলা চালিয়েছে এবং জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় ৮ম শ্রেণীর হায়দার নামে এক শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।

শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের মাসিক ও পরীক্ষার ফি কমানোর দাবি জানিয়েছিলো শিক্ষার্থীরা কিন্তু তাদের দাবির প্রতি কোনো সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ করেই পরীক্ষা শুরু হওয়ায় বিপাকে পরে তারা এসময় ফি কমানোর দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করে তারা।পরে একটি মিছিল বের করে উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে ইউএনওর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে ইউএনও বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে ছাত্ররা স্কুলে ফিরে আসে।

বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণীর ছাত্র সুজন এবং মাহিন অষ্টম শ্রেণীর নাজমুন এর সাথে কথা হলে তারা বলেন,পরীক্ষার ফি এবং মাসিক ফি বাবদ ১হাজার ৫ শত করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। আমরা ফি কমানোর দাবি করলে স্যারেরা আমাদের কথা না শুনে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে যেতে বলে। আমরা অনুরোধ করলেও স্যারেরা আমাদের কথা শোনে নি।পরে বাহিরে এসে অনেক ছাত্রছাত্রী মিলে আমরা ফি কমানোর জন্য মিছিল করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, কিছু ছাত্র পরীক্ষার হলে যেতে চাইলে স্যারেরা তাদের বেত দিয়ে মারধর করে এসময় ভয়ে বাহিরে বের হতে গিয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র হায়দার আলীর হাত কেটে যায়। হায়দার আলী রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

অতিরিক্ত ফি এবং শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল করার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর মডেল সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব আজিম উদ্দিন বলেন,একটি কুচক্রী মহল এই বিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশ নষ্ট করার জন্য শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করিয়েছে।অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না স্কুল কর্তৃক নির্ধারিত ফি নিয়েই পরীক্ষা হচ্ছে।

রাজীবপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্ত্তী বলেন,খবর পেয়ে আমি স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি।সকালের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য।

রাজীবপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রব বলেন, বিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পায় তাদের কাছে মাসিক বেতন নেওয়ার সুযোগ নেই। ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *