মমিনুল ইসলাম বাবু ,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

আসছে ৩১জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামে দু’টি উপজেলায় আওয়ামীলীগ-বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রাথর্ীসহ ত্রি-মুখি লড়াই হবে। একাধিক বিদ্রোহী প্রাথর্ী নিয়ে দুশ্চিন্তায় আওয়ামীলীগ। ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই প্রাথর্ীসহ ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে উৎকন্ঠা। বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজয় হলে কেন্দ্রে জবাবদিহি নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্থানীয় নেতারা। ফলে বিদ্রোহীদের পাশে না থেকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার অনুরোধ জানাচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ। দলের প্রার্থীরা এখন একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে প্রাথর্ীরা তৃণমূল কমর্ী আর জনগণের উপর আস্থা রেখে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

দলীয়ভাবে অংশ না নিলেও বিএনপি’র প্রাথর্ীরা ইউপি নিবার্চনে স্বতন্ত্র প্রাথর্ী হয়ে লড়ছেন। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি অনেক বিদ্রোহী প্রার্থীরও অবস্থান ভালো। ফলে স্থানীয় ভোটারদের কাছে এবারের নির্বাচনে ত্রি-মুখি লড়াই হবার ধারণা।

জেলার চিলমারী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রাথর্ী-১৫জন, বিএনপি স্বতন্ত্র প্রাথর্ী-৫জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-৩জন,স্বতন্ত্র-২জনসহ মোট-৩২জন।

থানাহাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকা প্রতিক আব্দুর রাজ্জাক মিলন, সাবেক যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম চশমা প্রতিক,কৃষক লীগের আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা হালিমুজ্জামান বাবলু আনারস প্রতিক, আওয়ামীলীগ সমর্থক হুমায়ুন কবির মোটর সাইকেল প্রতিক,আমিনুল ইসলাম ঘোড়া প্রতিক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জাহেদুল ইসলাম গামছা প্রতিক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জোবাইদুল ইসলাম হাতপাখা প্রতিক এবং স্বতন্ত্র প্রাথর্ী টেলিফোন প্রতিক নিয়ে মহি উদ্দিন আহমেদ।

রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম নৌকা প্রতিক, সদস্য শিমুল মন্ডল চশমা প্রতিক, সাজেদুল ইসলাম আনারস প্রতিক,সাঈদ হাসান মিঠু টেলিফোন প্রতিক, আতিকুর রহমান অটোরিক্সা প্রতিক, বিএনপির ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আব্দুল করিম মিয়া মোটর সাইকেল প্রতিক,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এরশাদুল হক হাতপাখা এবং স্বতন্ত্র একমাত্র নারী প্রাথর্ী ঘোড়া প্রতিক নিয়ে জাহানারা বেগম।

অস্টমির চর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু তালেব নৌকা প্রতিক,সদস্য সোহরাব হোসেন আনারস প্রতিক, বিএনপি’র সদস্য নজরুল ইসলাম চশমা প্রতিক,জাতীয় পার্টি সমর্থক ঘোড়া প্রতিক নিয়ে নজরুল ইসলাম।

রমনা ইউনিয়নের আওয়মীলীগের সভাপতি আজগার আলী নৌকা প্রতিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ওবাইদুল হক টেলিফোন প্রতিক, সদস্য গোলাম আশেক মোটর সাইকেল প্রতিক,সদস্য হাবিবুর রহমান আনারস প্রতিক,সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি নুর-ই-এলাহী ঘোড়া প্রতিক, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গাজী শিবলী আকন্দ চশমা প্রতিক, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক জোবায়দুল ইসলাম সুইট অটোরিক্সা প্রতিক,সদস্য নুর আলম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা রাশেদুল ইসলাম।

চিলমারী সদর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি গয়ছল হক নৌকা প্রতিক,কৃষকলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চশমা প্রতিক, ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রিয়াজুল হক আনারস প্রতিক।

ভূরুঙ্গামারীতে ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রাথর্ী-০১জন,বিএনপি স্বতন্ত্র প্রাথর্ী-৫জন, জাতীয় পার্টি-০২জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-৩জনসহ মোট-১৫জন প্রাথর্ী।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক নৌকা প্রতিক,জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুর রহমান রোজেন লাঙ্গল প্রতিক, বিএনপি’র সাবেক উপজেলা যুবদলের সভাপতি ইফতেখায়রুল ইসলাম আনারস প্রতিক, সমর্থক আবুল কালাম আজাদ ঘোড়া প্রতিক, জাকের পার্টি আব্দুল হাই গোলাপ ফুল প্রতিক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতিক নিয়ে জুলহাস উদ্দিন।

শিলখুড়ি ইউনিয়নের উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নৌকা প্রতিক, সাবেক ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন ইউসুফ আনারস প্রতিক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতিক নিয়ে আজিজুল হক।

পাথরডুবি ইউনিয়নে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ নৌকা প্রতিক, আওয়ামীলীগের সাবেক নেতা মানসুর রহমান আনারস প্রতিক,জাতীয় পার্টির নেতা আব্দুস সবুর লাঙ্গল প্রতিক, ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সভাপতি শাহাদত হোসেন ভোলা ঘোড়া প্রতিক এবং সদস্য রোকনুজ্জামান মোটর সাইকেল প্রতিক এবং ইসলামী আন্দোল বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতিক হারুন-অর-রশিদ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্ধিতা করছেন।

আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রাথর্ী হালিমুজ্জামান বাবলু বলেন,ভোটের দিন হঠাৎ করে কেউ গন্ডগোল করলে ছাড় দেয়া হবে না। তবে আমরা কোন সংঘাত চাই না।

অপর প্রাথর্ী আমিনুল ইসলাম বলেন,আমার চিলমারী ইউনিয়নটি চরাঞ্চল। এখানে প্রায় ৮৫% ভোটার চরে বসবাস করেন। তাদের জোড় আবদারের কারণে আমি প্রাথর্ী হয়েছি। কিন্তু দলীয় নৌকা প্রতিকের প্রাথর্ীসহ তার সমর্থকরা আমাকে হুমকি এবং প্রচারণায় বাধা গ্রস্থ করছে।

আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রাথর্ী আব্দুর রাজ্জাক মিলন বলেন,এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। একাধিক প্রাথর্ী থাকলেও নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে না।

বিএনপি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রাথর্ী জোবায়দুল ইসলাম সুইট বলেন,একাধিক প্রাথর্ী থাকায় নিবার্চনের মাঠে একটা শংকা থেকে যায়। প্রশাসন কঠোর হলে ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবে।

রমনা ইউনিয়নের ভোটার রমিছা বেগম বলেন,যত গুলো প্রাথর্ী দ্বাঁড়াইছে ভোট কাকে দেমো সেই ভাবনা আছি। তবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হোক আমরা এটাই চাই।

আরেক ভোটার মজিবর রহমান বলেন,হামার নদী ভাঙ্গন এলাকায় ভাঙ্গন রোধ এবং এলাকার উন্নয়ন করবে এমন প্রাথর্ী দেখে ভোট দেবো।

চিলমারী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শওকত আলী বীরবিক্রম বলেন,আওয়ামীলীগের মূল সংগঠনের বিদ্রোহী প্রাথর্ী কম থাকলেও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের বেশি। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন,একাধিক প্রাথর্ী নিবার্চনে অংশ নিলেও আইন-শৃংখলা অবনতি না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কিছু ছোট ছোট অভিযোগ আসলেও সেগুলো সমাধান হয়ে গেছে।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাযায়, জেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে এক লাখ ৬০হাজার ৬শ জন। এরমধ্যে চিলমারীতে ৫টি ইউনিয়নে ৯০হাজার ২২৩জন এবং ভূরুঙ্গামারীতে ৩টি ইউনিয়নে ৭০হাজার ৩৭৭জন।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *