বিরামচিহ্ন
সরদার আব্বাস উদ্দিন
প্রশ্নবোধক চিহ্ন নিয়েই শুরু হয় প্রতিটি জীবন,
সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে জীবনে আসে-
হাজারো কমা, ড্যাশ, কোলন, সেমিকোলন-
অথবা বিস্ময় সূচকের ঘোরে আটকে যায় সময়।
জীবনের একটি মাত্র বিরামচিহ্নই চিরন্তন সুন্দর,
দাঁড়ি।
মৃত্যুর মাধ্যমে হয় যার পরিসমাপ্তি।
তুমি আমাকে প্রশ্নবোধক চিহ্নতেই খুঁজে নিতে।
উত্তরে নিজের মতো করে লিখতে মহাকাব্য,
চাইলেই ছোটগল্প কিংবা উপন্যাস লিখে লিখে-
আমাকে সাজিয়ে নিতে পারতে নাটকীয় ছন্দে।
নিজের মতো প্রশ্ন করে করে নিজেই লিখতে উত্তর,
আর আমি তোমার লেখা উত্তর পড়ে পড়ে-
বুঝে নিতাম তোমার কাঙ্ক্ষিত ভালবাসার পরিমাপ,
হয়ে উঠতাম বন্ধন মমতায় ঘেরা সেই প্রচ্ছন্ন ভালবাসা।
কিন্তু তুমি আমার জীবনের কিছু চন্দ্রবিন্দু-
বিসর্গ আর অনুস্বরকে করলে অধ্যায়ন,
বেঁধে বেঁধে যাওয়া চন্দ্রবিন্দুতে খুঁজে পেলে আমার স্বর,
বিসর্গতে নিজের অপারগতা বুঝে এড়িয়ে গেলে,
অনুস্বরে খুঁজে পেলে আমার না বলা ভালবাসা।
যে অনুস্বর পাশাপাশি দুটো অক্ষরকে-
মাঝখান থেকে ভেঙে উচ্চারণ করতে বাধ্য করে,
চেষ্টা করেও তাই বাঁধতে পারোনি গোচরীভূত বন্ধনে।
প্রেমের নৌকার পালটাকে নিজের মুঠোয় রেখে-
দাঁড় টেনে এগিয়ে চলেছো নিরবধি,
আকন্ঠ বাসনায় পরিপূর্ণ আমার পৃথিবীকে ছুঁতে,
খাপছাড়া তলোয়ার হয়ে-
আমার অনুভূতিকে টুকরো টুকরো করে দেখেছো,
খুঁজেছো সেখানে কতটা হয়েছো আমার।
নিরবতার সরব ভাষা পড়তে গিয়ে ভুলেছো উচ্চারণ,
আমার অদম্য আহ্বান ভীষণভাবে উপেক্ষা করেছো,
সুযোগ করে নিয়েছো আমার কাছ থেকে অনেক দূরে যাওয়ার,
হয়ে উঠতে চেয়েছো আমার জীবনে সবচেয়ে বড়ো প্রশ্ন।
আর আমাকে!
জীবনের এই প্রান্তে এসে বানালে ভীষণ আশ্চর্যবোধক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *