কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল হোসেনের মাধ্যমে প্রায় ৩০জন শিক্ষিত বেকারকে নিজস্ব এনজিও এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার নাম করে লালমনিরহাটের ধাইরখাতা গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে চর কুলাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াহেদ আলী ৭০লাখ টাকা হাতিয়ে আত্মগোপন করে। ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেনের মামলার প্রেক্ষিতে রংপুর র‌্যাব-১৩ অভিযান চালিয়ে গত ৩০জানুয়ারী প্রতারক ওয়াহেদ আলী কে গ্রেফতার করে নাগেশ্বরী থানায় সোপর্দ করেছে। ওয়াহেদ আলীর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণা মামলা চলমান রয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট সদরের কুলাঘাট ইউনিয়নের শীর্ষ বিএনপি নেতা ও কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান, চর কুলাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর তত্ত্বাবধানে তার ভাস্তি জামাতা প্রতারক ওয়াহেদ আলী মাস্টারের মাধ্যমে নাগেশ্বরীর রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল হোসেনের মাধ্যমে প্রায় ৩০জন শিক্ষিত বেকারকে নিজস্ব এনজিও এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে নগত, বিকাশ ও ডাচ্ বাংলা হিসাব নম্বর- ৭০১৭৫১৫৬৮৫০৩, ৭০১৭৩১৮০৯৮২২১ মাধ্যমে ৭০লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ইমেইলে মাধ্যমে ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন। এমনকি প্রতারক ওয়াহেদ আলী এনজিও পার্টনার করার কথা বলে ইসমাইল হোসেন মাস্টারের পরিবারের সাথে আত্মীয়তা গড়ে তোলেন এবং যাতায়াতের সুবাদে ওয়াহেদ আলী অতি কৌশলে ইসমাইল হোসেনের মাস্টারের জনতা ব্যাংকের একটি স্বাক্ষরিত চেক বই চুরি করেন। ব্যাংকের হিসাব নম্বর-১০০১৮৩৫১১৬৮২ ও নাগেশ্বরী থানার জিনিস নম্বর-৭২৮। চেক উদ্ধারে ইসমাইল হোসেন গত ২১জানুয়ারি লালমনিরহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে প্রতারক চক্রের মূল হোতা লালমনিরহাট সদরের কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ও চর কুলাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর যোগসাজশে তার জামাতা প্রতারক ওয়াহেদ আলী লালমনিরহাট আদালতে ইসমাইলের নামে ৭০লাখ টাকার একটি অসত্য চেক ডিজাইনার মামলা করেন। যাহার মামলা নং- ২৪৮/২২। প্রতারক ওয়াহেদ আলী ৭০লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায়নাগেশ্বরী থানার মামলা নম্বর-১২/২৩ এর প্রেক্ষিতে রংপুর র‌্যাব-১৩ এর একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে গত ৩০জানুয়ারী কুলাহাট বাজার থেকে প্রতারক ওয়াহেদ আলী কে গ্রেফতার করে নাগেশ্বরী থানায় সোপর্দ করেছে।

র‌্যাব-১৩’র অধিনায়কের পক্ষে সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিডিয়া ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লালমনিরহাট সদর থানার মামলা নম্বর-২৮/৭৯, তারিখ-১৮ফেব্রুয়ারী ২০১৩, ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানার মামলা নম্বর-২১, তারিখ-২০আগস্ট ২০০৮, লালমনিরহাট জেলার সদর থানার মামলা নং-৪১/১১৮, তারিখ-১৯ফেব্রুয়ারী ২০২০সালের মামলাগুলো বিচারধীন রয়েছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা শিক্ষিত বেকার যুবক আমার বিশ্বাস করে ইসমাইল হোসেন মাস্টারের মাধ্যমে চর কুলাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর কথামতো ভাস্তি জামাতা ওয়াহেদ আলী মাস্টার এনজিও এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেয়ার কথা বলে ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে আমাদের ৩০জনের কাছে ৭০লাখ টাকা নিয়েছে।

মামলার বাদী ইসমাইল হোসেন মাস্টার বলেন, ওয়াহেদ আলী আমার মাধ্যমে ৩০জন কে চাকুরি দেয়ার প্রলোভন ও নিয়োগপত্র দিয়ে ৭০লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এবং আমার বিরুদ্ধে লালমনিরহাট আদালতে ৭০লাখ টাকার চেক ডিজাইনার মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করেন। আমি সব হারিয়ে এক নিঃস্ব। আমার মৃত্যুই একমাত্র পথ। আমি উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

লমনিরহাট সদরের কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ও চর কুলাহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলীর সাথে মুঠোফোন কথা হলে তিনি জানান, ওয়াহেদ আলী আমার ভাস্তি জামাতা ও আমার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। বিষয়গুলো জানি। আদালত থেকে জামিনে বের করে তারপর বিষয়টি আপোষ করার চেষ্টা করবো।

মাস্টারের মাধ্যমে নাগেশ্বরীর রামখানা ইউনিয়নের নাখারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল হোসেনের মাধ্যমে প্রায় ৩০জন শিক্ষিত বেকারকে নিজস্ব এনজিও এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে নগত, বিকাশ ও ডাচ্ বাংলা হিসাব নম্বর- ৭০১৭৫১৫৬৮৫০৩, ৭০১৭৩১৮০৯৮২২১ মাধ্যমে ৭০লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ইমেইলে মাধ্যমে ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন।

নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসান বলেন, ওয়াহেদ আলী জেলার হাজতে রয়েছে। মামলা তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *