ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ। এমন অভিযোগ থানায় করার পর মুল ঘটনাকে আড়াল করতে স্থানীয় ভাবে নিষ্পত্তি জন্য দিনভর চেষ্টা করে উভয় পক্ষের অভিভাবক, আওয়ামীলীগ নেতা৷

বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশের পর আপষ কারিরা রাতারাতি পূর্বের অভিযোগ পরিবর্তন করে দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করালেন ভুক্তভোগীর মাকে দিয়ে। গত বুধবার (২২মার্চ) উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের শাহাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের বাড়িতে তিন বন্ধু ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের এমন ঘটনা ঘটায়।
ঘটনার পরের দিন জাহিদুল ইসলাম সুমনের বাবা শাহাজুল ও রাব্বীর বাবা সাইদুর ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আশরাফ ফকিরের বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক বসে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে দর কষাকষি, বিয়ের আয়োজন, থানা ও নেতা ম্যানেজ ইত্যাদি। এমন সমাধানের প্রস্তাব অভিযুক্তদের৷ ভুক্তভোগীর মা রাজি না হয়ে তারা ওইদিন রাত ৮টায় সাংবাদিকদের সরাসরি ঘটনার বিবরনের ভিডিও সাক্ষাৎকার দেন । সাংবাদিকের হস্তক্ষেপের বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে আপষ কারিরা ভুক্তভোগীকে রাত ১০ টায় থানায় নিয়ে গিয়ে দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করান।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টায় সুমনের বাবা মা বাড়িতে ছিল না। এ সুযোগে তার প্রেমিকা (১৬) ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে খালার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে প্রেমিক রিয়া নিশ্চিন্তা এলাকার মেয়ে সুমনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সুমন তার প্রেমিকাকে নিয়ে আলাদা ঘরে গিয়ে অবস্থান করে। এমন সময় সুমনের তিন বন্ধু গাড়ীর চাবি নেওয়ার অজুহাতে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। ওই ছাত্রীকে ঘরের ভিতরে একা দেখতে পেয়ে দুই বন্ধুর সহায়তায় একজন ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে ওই ছাত্রীকে জোরপুর্বক ধর্ষন করে। ছাত্রীর চিৎকারে সুমন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। ওই ছাত্রী বাড়িতে এসে তার মাকে ঘটনাটি জানালে তিনি বৃহস্পতিবার ক্ষেতলাল থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করেন। আমার মেয়ের ঘটনাটি আপোষ করে দেয়ার জন্য ডেকেছিলেন। তিনি আমার মেয়েকে যে ছেলে শ্লীলতাহানি করেছে তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিল। ওই ছেলে ও ছেলের বাবা রাজি না হওয়ায় আমরা আপস করিনি।

জানতে চাইলে রাব্বীর বাবা সাইদুর বলেন আমার বাড়ি পুলিশ আসায় আওয়ামী লীগ ইউনিয়ন সভা পতি আশরাফ ফকিরের সংঙ্গে দেখা করি তখন ওই মেয়ের বাড়িতে মাকে নিয়ে যায় রহিম ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে আশরাফ ফকির সহ কয়েক জন নেতা গোপন বৈঠক শেষে বলেন রাব্বীর সংঙ্গে সুরাইয়ার বিয়ে মাধ্যমে সমাধান করতে হবে বিয়ে না করলে আপনার ছেলের জেল ও ফাসি হতে পারে তখন আমি ভয়ে বিয়ের সম্মতি দেয় কোর্টে গিয়ে জোর করে ৫ হাজার টাকা ও আমার স্বাক্ষর নেয়৷ নূর মহাম্মদের ছেলে রাব্বী মতির ছেলে চঞ্চল সাহাদুলের ছেলে সমুন এদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থানা মিটাবে নেতারা এখন শুনলাম অভিযুক্ত চারজনকে বাদ দিয়ে শুধু আমার ছলে সহ দুই জনের নামে মামলা করা হয়েছে অন্য আসামীদের বাদ দিলো করা আমি চায় এর সঠিক তদন্ত করে আমার ছেলে দুষি হলে তার বিচার করা হক৷

অপরাধের সহায়তাকাৱীও একজন অপরাধী তার বিচার না হইলে ন্যায় বিচার প্রশ্নবিদ্ধ। অভিযুক্ত রিয়া উপজেলার নিশ্চিন্তা এলাকার নবম শ্রেণীর ছাত্রী একই হাইস্কুলে পড়ার সুবাদে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী কে ফুসলিয়ে রিয়া তার প্রেমিক সুমনের বাড়িতে নিয়ে যায়৷ কর্তৃপক্ষ নীরব কেন৷ যেহেতু এই ঘটনার পরিকল্পনাকারী জাহিদুল ইসলাম সুমন ও তার প্রেমিকা রিয়া এই মামলা থকে বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য দু’জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে৷

অভিযুক্ত চঞ্চলের মুঠোফোনে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি সুমনের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করি আমাকে সুমন ফোন করে বলে আমাদের বাড়িতে একটু এসো আমি ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি রাব্বিসহ দুইজন মহিলা সুমন তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে আলাদা রুমে চলে যায় রাব্বিসহ এই ছোট মেয়েটি এক ঘরে রাব্বি সোফায় বসে থাকলে আমি চলে আসি আমার সঙ্গে ছোট রাব্বি ও চলে আসে এমতাবস্থায় বড় রাব্বি ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে অবস্থান করে আমি বার বার দরজাই ধাক্কা দেয় দরজা খোলে না রাব্বি আমি বিয়ে করবো এই মেয়েক পাঁচ মিনিট দাঁড়া তখন আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি ছোট রাব্বি আমার মাথায় পানি দে জ্ঞান ফিরে দেখি দরজা খুলে রাব্বি গায়ে শার্ট পড়তেছে দৌড়ে ঘরের ভিতর দেখি ছোট আপু হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠে পায়ে ধরে বলি আপু কি হয়েছে আমাকে খুলে বল তাকে ধর্ষণ করেছে তখন সুমন ও তার গার্লফ্রেন্ড রিয়া ছোট আপুকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়৷

আপস বৈঠক থেকে বাখেড়া গ্রামের বড়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলোম হোসেন জানান, দুই সাংবাদিক ঘটনার তথ্য নেয়ার জন্য এসেছিল এ ঘটনার নিউজ বন্ধকরার জন্য তাদের সহয়াতা নিয়েছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জৈনক ব্যক্তি বলেন ভুক্তভোগী অসহায় অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় অর্থের বিনিময়ে মীমাংসার আয়োজন করেছে৷ রিয়া নামের মেয়েটি সহ প্রধান চার আসামীকে বাদ দিলো ঘাতক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফ ফকির৷

বড়াইল ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আশরাফ আলী ফকির জানান, ছেলে পক্ষের অভিভাবকরা আমার কাছে গিয়েছিল। আমি তাদের পরামর্শ দিয়েছি, আপনারা মেয়ের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে বসে আপস করাই ভলো। এর বেশি আমি আরকিছু বলতে পারবনা।

ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ রাজিবুল ইসলাম জানান, ধর্ষণ চেষ্টার একটি অভিযোগ হয়েছিল। সেটি রাতে আবার ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী ধর্ষনের অভিযোগ নিয়েছি। তাকে মেডিকেল টেস্টের জন্য পাঠানো হবে। পরর্বতীতে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *