ফারুক আহমেদ কলকাতা

খাজিম আহমেদকে উজ্জীবন ২০২৩ শহীদুল্লাহ পুরস্কার প্রদান করা হবে ১২ মার্চ ২০২৩ রবিবার ২ টো থেকে সন্ধ্যা ৬ টা ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস সভাকক্ষে, পার্ক সার্কাস ৪ নম্বর ব্রিজের নিকটে। এদিন মশাররফ হোসেন পুরস্কার প্রদান করা হবে সৈয়দ রেজাউল করিমকে এবং রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন পুরস্কার প্রদান করা হবে সুমিতা দাসকে।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অতিথি হিসেবে লেখক ও সমাজকর্মী মহিউদ্দিন সরকার, আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ শামীম, কোষাধ্যক্ষ ড. মীর রেজাউল করিম, অধ্যাপক আবদুল মতিন প্রমুখ।

উদার আকাশ প্রকাশন সংস্থা থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘পশ্চিমবাংলার বাঙালি মুসলমান : অন্তবিহীন সমস্যা’ এবং ‘বাঙালি মুসলমান : আপন ভুবনের সন্ধানে’ নামক প্রবন্ধগ্রন্থে ঐতিহাসিক খাজিম আহমেদ, একটি জাতিসত্তার ইতিহাস, উৎপত্তি-বিকাশ, রাজনৈতিক অবস্থান, সামাজিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক অধৌবিকাশ, ধর্মীয় পরিচয়ের প্রশ্নে উপেক্ষা, ‘মিশ্র সংস্কৃতি’ বা ‘কমপোজিট কালচার’-এর অনিঃশেষ গুরুত্ব, অর্থনৈতিক নিঃসীম দুর্বলতা সর্বোপরি মানবীয় মর্যাদা নিয়ে ‘বেঁচেবর্তে’ থাকার প্রয়োজনে পরম সাদরে লালিত ধর্মনিরপেক্ষতা কেন প্রয়োজন—ইত্যাকার বিষয় নিয়ে বিস্তৃত চর্চা করেছেন।

সঠিক ইতিহাস রচনা করতে গেলে কোনো পক্ষ, কোনো ধর্ম ও মতবাদের প্রতি বিশেষ আস্থা রাখা যে সর্বসময়ে উপেক্ষণীয়, তা তাঁর রচনায় বারবার পরিস্ফুট। যেমন বর্তমান গ্রন্থে ‘সেক্যুলারিজমের সওয়াল’ নামে একটি প্রবন্ধ থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃত তিনি লিখেছেন, ‘এই দেশীয় মুসলমান সমাজের বেদনা এইখানে যে, স্বধর্মী কোনো ব্যক্তিত্ব তার সমাজের দুর্বলতার দিকটি যুক্তি ও সহানুভূতির সঙ্গে পর্যালোচনা করেননি। …সাধারণভাবে মুসলিম নেতৃত্ব সস্তায় কেল্লাফতে করার জন্য এমন সব দাবি বা সমস্যার কথা তোলেন, যার ফলে অমুসলমানরা (এমনকি প্রগতিশীল অংশও) মুসলমানদের থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। …শুধু মুসলমানদের নিয়ে যদি কেউ একটি পৃথক রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলতে চান, তাহলে সুনিশ্চিতভাবে তা হবে মুসলিম স্বার্থবিরোধী। …একমাত্র জন্মের সুবাদে মুসলমান নেতারা মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা করতে সমর্থ, সাধারণ উপেক্ষিত মুসলমান সমাজ আর কতকাল এই ধরনের প্রচারের শিকার হবেন, তা আমাদের জানা নেই।’

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মানসকুমার সান্যাল, সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক দেবাংশু রায় ইতিহাসবিদ খাজিম আহমেদ রচিত ‘পশ্চিমবাংলার বাঙালি মুসলমান : অন্তবিহীন সমস্যা’, এবং ‘বাঙালি মুসলমান : আপন ভুবনের সন্ধানে’ বইদুটি আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর কক্ষে বইটি প্রকাশের ছোট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পাল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষক ও উদার আকাশ পত্রিকা ও প্রকাশন সংস্থার শীর্ষ নেতৃত্ব ফারুক আহমেদ।
দেশ-বিভাগ পরবর্তী পশ্চিমবাংলার জাতিসত্তা বিষয়ক অনন্যসাধারণ প্রাবন্ধিক ইতিহাসবেত্তা, উপমহাদেশ বিষয়ক সমাজবিজ্ঞানী খাজিম আহমেদের দীর্ঘজীবনচর্চিত অজস্র প্রবন্ধাবলীর মধ্য থেকে ১৮টি এবং ১৭টি দিক-নির্দেশক প্রবন্ধ এই গ্রন্থদুটিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
বাঙালি মুসলমানদের বড় দুর্ভাগ্য হচ্ছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি হিসেবে তাদের বিলম্বিত উত্থান। এখনও সেই বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গে অনেকাংশে প্রযোজ্য। সেই ‘পরাভব চেতনা থেকে মুক্তির পথসন্ধান করা হয়েছে, ‘বাঙালি মুসলমান: আপন ভুবনের সন্ধানে’—নামের বইটিতে। বইটির প্রকাশক উদার আকাশ প্রকাশন সংস্থার কর্ণধার ফারুক আহমেদ।
খাজিম আহমেদ-এর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন ‘পশ্চিমবাংলার বাঙালি মুসলমান : অন্তবিহীন সমস্যা’, ‘উদার আকাশ’ প্রকাশন থেকে দ্বিতীয় সংস্করণটিও প্রকাশিত হয়েছিল উপাচার্য অধ্যাপক মানস কুমার সান্যাল ও সহ উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম পালের হাত দিয়ে। গবেষণালব্ধ গ্রন্থটি উভয়বঙ্গে ব্যাপক সমাদৃত। গবেষকদের প্রথম পছন্দের ‘রেফারেন্স’ গ্রন্থ হিসেবে মান্যতা পেয়েছে।
 
ইতিপূর্বে খাজিম আহমেদ ‘বর্ণপরিচয়’, ‘নতুন গতি’ এবং ‘বাসভূমি’ পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *