কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইআইআর প্রকল্প) আওতায় বৈশা‌খের আসন্ন বৃ‌ষ্টি মৌসুমে ৬টি প্যাকেজে ১কোটি ৫৯লাখ টাকা ব্যয়ে মরা শংকোষ খাল খননের নামে অর্থ হ‌রিলুটের পায়তারা করাসহ খাস জমি ছাড়াও কৃষকের নিজ নামীয় ও ক্রয়কৃত জমি জোরপুর্বক খননের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ইআইআর প্রকল্প) রংপুর সাকের্লের আওতায় নাগেশ্বরী বিএমডিএ অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম ও মেকানিক শরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে বৈশা‌খের আসন্ন বৃ‌ষ্টি মৌসুমে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের মরা শংকোষ নদীর ভেল্লিকুড়ি থেকে হুচারবালা ত্রিমোহনী পর্যন্ত ৬হাজার ৯শ মিটার এলাকা মেসার্স খান ট্রেডার্স ৫টি ও মোসলেম উদ্দিন ট্রেডার্স ১টি প্যাকেজে ১কোটি ৫৯লাখ টাকা ব্যয়ে মরা শংকোষ নদী পুনঃ খনন শুরু হলেও প্রকল্পের কাজে নানা অনিয়ম ও অর্থ হ‌রিলুটের অভিযোগ। নাগেশ্বরী বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক উদ্দিনের যোগসাজশে মরা শংকোষ নদী খাল খননের নামে খাস জমি ছাড়াও শতাধিক কৃষকের নিজ নামীয় ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি প্রায় ৬শত একর ফসলি জমিতে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে জোরপুর্বক নামমাত্র খাল খনন করে অর্থ আত্মসাতে পায়তারা করছেন ঠিকাদার। ফসলী জমি হারিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পথে বসেছেন অভিযোগ করেন অনেক কৃষক।

আঃ জলিল, হাসেন আলী, মজিবর রহমান, নজর আলী, সমসের আলী, মাইদুল ইসলাম, ময়নাল হকসহ অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে বৃ‌ষ্টি মৌসুম। শংকোষ নদী‌তে পা‌নি‌তে ভ‌রে গেছে। খাষ জমি ছাড়াও আমাদের বৈধ দুই ফসলি জমিতে খাল খনন করছে বিএমডিএর ঠিকাদা‌র। বাধাঁ প্রদান করতে গেলে চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক উদ্দিন, সাইদুর রহমানসহ কয়েকজন নেতা উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের ভয় দেখিয়ে জোরপুর্বক নামমাত্র খাল খনন করে অর্থ আত্মসাতে পায়তারা করছে। আমরা ফসলি জমি হারিয়ে পথে বসেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও প্রতিকার হচ্ছে না। উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঠিকাদা‌র মোসলেম উদ্দিন বলেন, বিএমডিএ অফিসের নির্দেশনা দেরিতে পাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করেছি। বিএমডিএ ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে খাল খনন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলীর কাছ থেকে জেনে নিন।

চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মানিক উদ্দিনের মুঠোফোনে সাংবাদিকের পরিচয় পাওয়া মাত্র ফোন কেটে দেন।

নাগেশ্বরী বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুব আলম বলেন, সম্পত্তি নিজের বলে দাবি করলে কি নিজের হয়। অনলাইনে জমির কাগজপত্র যদি বাইবেল কুরআন হতো তাহলে দেশটা অনলাইনে চলতো।

বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সহকারী প্রকৌশলী কে বলা হয়েছে এসিল্যান্ড ও ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়ে কাজ করবেন। লোকজনের যদি কোন অভিযোগ থাকে ইউএনও অভিযোগ দেবেন। আমরা কাজ বন্ধ করে দেবো।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খাল খননের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যত্যা পেলে খাল খনন বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *