কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
ভুরুঙ্গামারীতে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের উন্নয়নে গৃহিত এডিপি বিশেষ বরাদ্দের ২২ লাখ টাকার ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার ছিটমহল ও প্রকল্প পরিদর্শন করলেন সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
জানাগেছে, উপজেলায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১০ টি ভারতীয় ছিটমহল রয়েছে। ছিটমহল গুলোর উন্নয়নে ২৫ লাখ টাকা এডিপির বিশেষ বরাদ্দ হিসাবে প্রদান করা হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখের মাসিক সমন্বয় সভায় ৫টি ছিটমহলের উন্নয়নে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করা হয়এবং অবশিষ্ট ৩ লাখ টাকা দিয়ে ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের ১টি ছিটমহলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রাখা হয়। পি আইসির মাধ্যমে গৃহিত প্রকল্প গুলো হলো (১) পাথরডুবি ইউনিয়নে দিঘলটারী ছিটমহলে মাটির রাস্তা নির্মান- (২)পাথরডুবি ইউনিয়নে ক্যাম্পের মোড় হতে ছিট সেউতি কুরশার বাংলা বাজার হয়ে কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত মাটি দ্বারা রাস্তার উন্নয়ন (৩) একই ইউনিয়নে সেউতি কুরশা ছিটমহলে বাংলাবাজার চত্বরে মাটি ভরাট ও ল্যাট্রিন নির্মাণ (৪) একই ইউনিয়নের সেউতি কুরশা ছিটমহলের কাদেরের মোড় হতে সাহেবগঞ্জ ছিটমহলের হায়দারের বাড়ি পর্যন্ত মাটি দ্বারা রাস্তা পুনঃনির্মাণ (৫) পাথরডুবি ইউনিয়নের সেউতি কুরশা ছিটমহলের সেউতি কুরশা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘর মেরামত , ১টি নলকুপ ও ১টি সোলার প্যানেল স্থাপন (৬) শিলখুড়ি ইউনিয়নের ছোট গাড়ালঝড়া (২য় খন্ডে) মাটি দ্বারা রাস্তা নির্মাণ (৭) একই ইউনিয়নের গাড়ালঝোড়া ২য় খন্ড চিটমহলগামি মাটির রাস্তা পুনঃনির্মাণ এবং ছোট গাড়াল ঝোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নলকুপ ও সোলার প্যানেল স্থাপন (৮) শিলখুড়ি ইউনিয়নের ছোট গাড়ালঝোড়া ২য় খন্ডে সেচ সুবিধায় ইরিগেশন পাইপ স্থাপন (৯)একই ইউনিয়নে ছোট গাড়ালঝোড়া ২য় খন্ডে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘর মেরামত ও স্কুল গামী রাস্তা মাটি দ্বারা নির্মাণ (১০) উপজেলার ১০টি ছিট মহলে দুস্থ কৃষকদের মাঝে স্প্রেমেশিন সরবরাহ করন প্রতিটি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১লাখ ৯৭ হাজার টাকা এছাড়া (১১) ছোট গাড়ালঝোড়া ও সেউতি কুরশা ছিট মহলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসবাবপত্র সরবরাহ ও সেউতি কুরশা ছিটমহলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাট্রিন ও প্রসাবখানা নির্মাণ বাবদ বরাদ্দ ১লাখ ৯৩ হাজার ৫শত টাকা।
এসকল প্রকল্পের কাজের তদারকি করার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ হাজার এবং অন্যান্য খরচ ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫ শত টাকা। এভাবে ২২ লাখ টাকা মিল করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান প্রকল্পগুলোর ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান এবং সেঅনুযায়ি তাদেও বিল ও প্রদান করার কথা স্বীকার করেন।
কিন্ত সরেজমিন অনুসন্ধান কালে দেখাযায় যে, ৩নং প্রকল্প পাথরডুবি ইউনিয়নে সেউতি কুরশা ছিটমহলে বাংলাবাজার চত্বরে মাটি ভরাট ও ল্যাট্রিন নির্মাণ প্রকল্পে প্রকল্প চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম ইউপি সদস্য পাথরডুবি ইউনিয়ন দেখানো হলেও বাস্তবে ঐইউনিয়নে এনামে কোন ইউপি সদস্য নেই। এলাকাবাসীর দাবী রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ দেখানো হলেও গুলো চল্লিশদিনের কর্মসুচির শ্রমিক দ্বারা করানো হয়েছে। দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র সরবরাহ ও নির্মাণের কথা বলা হলেও ঐ বিদ্যালয় দুটির নামে কোন জমি রেজিষ্ট্রি নাই, কোন কমিটিও নেই । উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানেননা এরকম দুটি বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব রয়েছে। ইরিগেশন পাইপ কিংবা ল্যাট্রিনের কোন অস্তিত্ব নেই। ১১ নং প্রকল্পের প্রকল্প চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান , প্রকল্পের ব্যপারে তিনি কিছুই জানেন না। এঅভিযাগ প্রাপ্তির পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজহারুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার প্রকল্পগুলো সরেজমিন পরিদর্শনে যান।
উপজেলা প্রকৌশলী এন্তাজুর রহমান জানান, অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজহারুল ইসলাম জানান, প্রকল্প গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে । পরিদর্শন শেষে কথা বলবেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *