আব্দুল হাকিম রাজ,রাজনগর(মৌলভীবাজার) থেকেঃ
মৌলভীবাজারের রাজনগরে গত ৫ বছর যাবৎ সরকারী ৭টি বালু মহাল ইজারা না হবার কারনে অবাদে চলছে বালু লুট। উপজেলার ধামাইছড়া, কালামুহা, জমিলা ছড়া, হাড়ছড়া, পুরানলি ছড়া, উদনা ছড়াসহ ৭টি বালু মহাল ইজারা না হলেও সরকার দলের নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এতে সরকার প্রতিবছর প্রায় অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। এদিকে বালু চোরদের গ্রেপ্তারে রাজনগর উপজেলা প্রশাসন প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করলেও অভিযানের আগেই খবর ফাঁস হয়ে যাবার ফলে বেশীরভাগ অভিযানে বালু চোর গ্রেপ্তার সম্ভব হয়না। আর মাঝে মধ্যে ২/১ টি অভিযানে চোরদের আটক করলেও আটকের পর তাদের ছাড়িয়ে নিতে শুরু হয় প্রশাসনের উপর সরকার দলের নেতা-কর্মীদের চাপ প্রয়োগ।কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলাম এসবের তোয়াক্কা না করে গত ২২ ফেব্রুয়ারী বিকালে অভিযান চালান উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের ধামাইছড়া বালু মহালে। সেখান থেকে বালু চুরির সময় দুটি ট্রাকসহ (সিলেট ড-১১-২১৮৫ ও মৌলভীবাজার মেট্রো-ড-১১-০৬১২) ৪ জনকে আটক করেন তিনি। আটককৃতরা হলেন চানভাগ গ্রামের হামদু মিয়ার ছেলে জগলু মিয়া (২৮), মুটুকপুর গ্রামের মতাই মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২৩) ও চনু মিয়ার ছেলে আব্দুল আহাদ (২৩) এবং উত্তরভাগ চা বাগানের অপিন মিয়ার ছেলে সুমন (১৮)। এসব ট্রাক থেকে ১৩০ ঘনফুট বালু ১০০ ফুট মাটি জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ট্রাকচালক সোহেল মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড, আব্দুল আহাদ ও সুমনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদ- এবং ট্রাক চালক জগলু মিয়াকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এসব মহাল ইজারা বন্দোবস্ত না দিতে পরিবেশবাদী আইনজীবিদের সংগঠন ‘বেলা’-র করা মামলা ৫ বছরেও নিষ্পত্তি না হওয়ায় সরকার হারাচ্ছে বিরাট অংকের রাজস্ব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, বালু চোরদের আটক করে ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আদালতের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় বালু মহালগুলো ইজারা বন্দোবস্ত দেয়া যাচ্ছেনা। এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে বালু চোরেরা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার বালু লুট করছে। তবে তাদের ঠেকাতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *